ভারতঃ পুলিশ বনাম মাওবাদী
Posted: December 31, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: মাওবাদী Leave a comment২০১৫ সালে তুর্কি সরকারী বাহিনী ৩,১০০জন কমিউনিস্ট ‘পিকেকে’ গেরিলাকে হত্যা করেছে
Posted: December 31, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: পিকেকে, pkk Leave a comment২০১৫ সালে তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনী ৩ হাজার ১০০ জন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির(পিকেকে) সদস্যকে হত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) এক টেলিভিশন বক্তৃতায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোগান এ তথ্য জানিয়েছেন। কমিউনিস্ট পিকেকে গেরিলাদের দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও এ সময় তিনি জানান।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে দেশে ও বিদেশে ৩ হাজার ১০০ বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী। তুরস্কের পর্বত ও শহরগুলোর প্রতিটা ইঞ্চি সন্ত্রাস মুক্ত করতে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আর পিকেকে গেরিলাদের পাল্টা গেরিলা অভিযানে ২০১৫ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই শতাধিক সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানান এরদোগান। তবে এসব অভিযানে কত সংখ্যক বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে তিনি কিছু বলেননি।

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে কমিউনিস্ট কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি(‘পিকেকে’)র আরও কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। বুধবার সিজরে সরকারের জারি করা কারফিউ এর মধ্যেই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
একই দিন সিরনাক প্রদেশেও সরকারি বাহিনীর অভিযানের সময় পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। গত জুলাইয়ে আঙ্কারা ও পিকেকের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে যায়।
গত তিন দশকের সংঘর্ষে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে চল্লিশ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানায় গণমাধ্যম। সরকারের কারফিউ ও সংঘর্ষের কারণে এসব এলাকায় স্কুল কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ব্যাপক অসুবিধার মধ্যে পড়েছে বলে জানায় গণমাধ্যম।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, টানা সংঘাত-সহিংসতায় হুমকির মুখে পড়েছে জনজীবন। অনেকেই এলাকা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানায় তারা।
প্রতিদিন কমরেড সিরাজ সিকদারের কবিতা- (৯) ‘বিদ্রোহ-বিপ্লব’
Posted: December 31, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad, সাহিত্য ও সংস্কৃতি | Tags: কমরেড সিরাজ সিকদারের কবিতা, বিপ্লবী কবিতা Leave a comment
বিদ্রোহ-বিপ্লব
জনগণ আজ ডাক দিয়েছে
বিদ্রোহ-বিপ্লবের ডাক।
শোষণের ছয় পাহাড়
তারা উপড়ে ফেলবেই।
জনগণ আজ বারুদের স্তূপ
সলতের উষ্ণ আগুনের
আশায় উন্মুখ।
একটি স্ফুলিঙ্গ দাবানল জ্বালাবে।
শোষণের কালো বন
পুড়ে সাফ হয়ে যাবে।
অনেক আত্মত্যাগ
অনেক খুলি-রক্ত-হাড়
আর বেদনার নিষ্ফল ইতিহাস
চাপা পড়ে আছে
বাংলার মাটিতে।
ভারতের উপনিবেশ-
সোভিয়েট আর আমেরিকার লুণ্ঠন
আওয়ামী লীগ আর সংশোধনবাদীদের
বিশ্বাসঘাতকতা।
আরো কত কাহিনী।
দেশটাকে নিয়ে
শকুনে-কুকুরে কামড়া-কামড়ি।
পদ্মা-মেঘনা-যমুনায়
কত জল বয়ে গেছে।
কত শীত বসন্ত হয়ে গেছে পার।
বৃটিশরা উৎখাত হলো-
এলো পাকিস্তান-
তারাও উৎখাত হলো;
এলো ভারত আর তার তাবেদার।
পদ্মা-মেঘনা-যমুনার উদ্দাম স্রোত
তারা আটকে ফেলতে চায়।
স্রোত আরো উদ্দাম-উত্তাল।
বালির বাঁধ ভেঙ্গে যায়।
গণযুদ্ধের উত্তাল জোয়ারে
এরাও ভেসে যাবে।
ইঁদুরের মত ডুবে মরবে।
জনগণ চায় বিপ্লবী পার্টি
সঠিক নেতৃত্ব।
আমাদের পার্টি
ভিতরের আর বাইরের
শত্রুর শত বাধাবিঘ্ন
পরাজিত করে
বিজয়ের পথে চলেছে।
প্রতিদিনই শক্তিশালী হচ্ছে।
কিন্তু আরো জোরে চলতে হবে।
আরো দ্রুততর।
দিনকে আঁকড়ে ধরতে হবে কমরেড-
ঘন্টাকে আঁকড়ে ধরতে হবে
জনগণের বিদ্রোহ-বিপ্লবে
নেতৃত্ব দিতে হবে আমাদের।
জনগণ আজ ডাক দিয়েছে
বিদ্রোহ-বিপ্লবের ডাক।
কলকাতাঃ RADICAL এর গণসংযোগ (২য় দিন)
Posted: December 31, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: RADICAL Leave a commentপ্রতিদিন কমরেড সিরাজ সিকদারের কবিতা- (৮) ‘কারার অন্তরালে’
Posted: December 30, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: কমরেড সিরাজ সিকদারের কবিতা, বিপ্লবী কবিতা Leave a comment
কারার অন্তরালে
পত্রিকায় দেখেছি
তোমাদের ছবি-
পড়েছি তোমাদের
বীরত্ব গাঁথা।
বিষণ্ণ বেদনায় ভরে গেছে প্রাণ-
মুহূর্তেই দৃঢ়তায় কঠিন হয়েছে
তোমাদের আরদ্ধ কাজ
সম্পন্ন করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞায়।
নীল আকাশ
রোদে ভরা উজ্জ্বল দিন
বা-
চাঁদেভরা সুন্দর রাত
বা-
সবুজ শ্যামল ভূমি;
কমরেডদের সান্নিধ্য;
জনগণের ঘনিষ্ঠতা;
দেশ-বিদেশের বিজয় বার্তা থেকে
দূরে-অনেক দূরে-
কারার অন্তরালে;
জনাকীর্ণ ব্যারাকে;
বা-
নির্জন গরাদ মোড়া ক্ষুদ্র সেলে;
শ্বাসরুদ্ধ পরিবেশে
বা-
নির্মম অত্যাচারে
ফ্যাসিস্টদের সম্মুখে
বলিষ্ঠ প্রত্যয়ে
এখনো করছো সংগ্রাম
এখনো চালাচ্ছো লড়াই।
তোমাদের কষ্টকর জীবন-
কঠোর সংগ্রাম
জাগায় দৃঢ় সংকল্প
গভীর প্রেরণা।
চারিদিকে বিজয় বার্তা
অগ্রগতির খবর-
উৎসাহ-উদ্দীপনার জোয়ার।
দিনগুলো আমাদের
সময় আমাদের পক্ষে।
সেদিন আর দূর নয়
কারাগার থেকে
তোমরা মুক্ত হবে
বিজয়ীর বেশে।
আনন্দমুখর হাজার জনতা-
উজ্জ্বল নীল আকাশ
তোমাদের স্বাগত জানাবে।
আর-
অন্ধকার কারাগুলো-
ভরে যাবে
ফ্যাসিস্টদের অপবিত্র দেহগুলোতে।
আমরা কাজ করছি-
সেদিনের জন্যে।
ভারতঃ পুলিশের কথিত এনকাউণ্টারে নিহত হলেন মাওবাদী নেতা ‘নাগেশ’
Posted: December 30, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: এনকাউণ্টার, মাওবাদী Leave a commentঅন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবেরি জেলার এক জঙ্গলে সোমবার রাতে পুলিশের কথিত এনকাউণ্টারে নিহত হলেন মাওবাদী নেতা নাগেশ। পূর্ব গোদাবরী জেলার এসপি পি রবি প্রকাশ জানায়, এই মাওবাদী নেতার নামে অপহরণের অভিযোগ ও ১৫টি হত্যা মামলা ছিল, তার মধ্যে ৫টি ছিল এ বছরেই এবং তার মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। পুলিশের দাবি, কে চুক্কা ওরফে নাগেশ (৩৫) নিষিদ্ধ সিপিআই(মাওবাদী) এর সাবারি এলাকায় বিভাগীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৪ সালে মাওবাদী পার্টিতে যোগ দেন নাগেশ।
অনুবাদ সূত্রঃ http://www.siasat.com/news/naxal-killed-encounter-police-ap-893562/
রাজতন্ত্র ও ধর্মীয় রাষ্ট্র উচ্ছেদে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা ।। বদরুদ্দীন উমর
Posted: December 30, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বদরুদ্দীন উমর Leave a commentবর্তমান বিশ্বের জটিল পরিস্থিতিতে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে সংকট নেই। অধিকাংশ দেশেই আছে বড় ধরনের সব সংঘর্ষ ও শাসন সংকট এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ঘটিত সংকট। নেপালও এদিক দিয়ে ব্যতিক্রম নয়। একুশ শতকে নেপাল অনেক রকম সংকট অতিক্রম করে এখন যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে তাকে সংকটযুক্ত বলা যায় না। তবে সংকটের চরিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আছে। কিন্তু সংকট যতই থাক, বর্তমান পরিস্থিতির একটা ইতিবাচক দিক হচ্ছে, সেখানে এখন পূর্ববর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেশের জাতীয় স্বার্থ ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এমন এক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা ইতিপূর্বে কখনও দেখা যায়নি।
ভারত সরকার ১৯৪৭ সালের পর থেকেই নেপালের ওপর তার আধিপত্য বজায় রেখে এসেছে। সে আধিপত্য তারা বজায় রেখেছিল নেপালি কংগ্রেস ও নেপালি রাজতন্ত্রের মাধ্যমে। সে অবস্থায় নেপাল সরকারের সঙ্গে ভারতের কোনো দ্বন্দ্ব-বিরোধ বড় আকারে ছিল না। এটা প্রথম দেখা দেয় রাজা মহেন্দ্রের সময়। ভারতে তখন কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধী। নেপাল বরাবরই ভারত থেকে তার জ্বালানি সংগ্রহ করত। কিন্তু রাজা মহেন্দ্র জ্বালানির জন্য একমাত্র ভারতের ওপর নির্ভরশীল না থেকে চীন থেকেও তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিলে ভারত সরকার তার বিরোধিতা করে। সেই বিরোধিতার মুখে নেপাল চীন থেকে তেল আমদানি শুরু না করলেও ভারতের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় এবং চীন থেকে তেল আমদানি ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় রাজীব গান্ধী সরকার নেপালে জ্বালানি সরবরাহ একেবারে বন্ধ করে দেয়। এর ফলে নেপাল এক গুরুতর জ্বালানি সংকটে নিক্ষিপ্ত হয়ে তেলের বিকল্প হিসেবে ব্যাপকভাবে জ্বালানির জন্য কাঠের ব্যবহার শুরু করে। এই প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহের জন্য তারা তখন হিমালয়ের পাদদেশে তাদের বিশাল বনভূমির গাছপালা এমনভাবে কাটতে থাকে, যাতে সে বনভূমির বিশাল অংশ বৃক্ষশূন্য হয়। দীর্ঘদিন এই ধ্বংসকাণ্ডের ফলে নেপালে সৃষ্টি হয় বড় ধরনের পরিবেশ সংকট। সেই সংকট থেকে তারা এখনও মুক্ত হয়নি।
নেপাল সম্প্রতি এক নতুন সংবিধান সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাদের পার্লামেন্টে পাস করার পর ভারত সরকার নেপালের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য এখন দ্বিতীয়বার সেখানে জ্বালানি সংকট সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এবার তাদের কৌশল ভিন্ন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত সরকার আগের মতো স্থূলভাবে সরাসরি জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ না করে অন্য কৌশল অবলম্বন করেছে। নতুন সংবিধানে নেপালকে ৭টি অঞ্চলে বিভক্ত করে সেখানে প্রশাসন পরিচালনার ব্যবস্থা থাকায় দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসকারী মাধেসিরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এর ফলে পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগে তারা নতুন সংবিধান পরিবর্তনের দাবি জানায় এবং তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা তাদের এলাকায় অবস্থিত ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী স্থলবন্দরগুলো অবরোধ করে ভারত থেকে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয়। এই অবরোধ এখনও চলছে। এর ফলে নেপাল এখন এমন এক বড় সংকটে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, যা মাধেসিসহ সমগ্র নেপালি জনগণের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মাধেসিরা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কারণ, তারা ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং তাদের এই সিদ্ধান্তের মূল হোতা হলো ভারত সরকার। তাদের মাধ্যমেই ভারত সরকার নেপালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। নেপালের পার্লামেন্ট যে নতুন সংবিধান সর্বসম্মতিক্রমে পাস করেছে তাতে নেপালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ করে সেখানে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, শতাধিক বছর ধরে নেপাল একটি হিন্দুরাষ্ট্র থাকা সত্ত্বেও এখন নেপালকে ঘোষণা করা হয়েছে একটি ধর্মবিযুক্ত রাষ্ট্র। ভারত এ দুইয়েরই বিরোধী। কিন্তু এই বিরোধিতা সত্ত্বেও নেপালের জনগণ এখন ব্যাপকভাবে রাজতন্ত্রের বিরোধী এবং নেপালকে একটি ধর্মবিযুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে দেখার পক্ষপাতী। জনগণের এই চিন্তাভাবনা ও পরিবর্তিত রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রবল প্রভাবের কারণেই শুধু সেখানকার ইউনাইটেড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী পার্টি ও মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টিই নয়, নেপালি কংগ্রেস পর্যন্ত নতুন সংবিধানে প্রজাতন্ত্র ও ধর্মবিযুক্ততার ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ পর্যন্ত নেপালি কংগ্রেস ভারতের স্বার্থ রক্ষার পক্ষে কাজ করে আসা সত্ত্বেও এখন যে তারা আর ভারতের নির্দেশ আগের মতো মেনে চলার মতো অবস্থায় নেই, এটা খুব স্পষ্ট ও তাৎপর্যপূর্ণ। নেপালের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনই নেপালি কংগ্রেসকে এই অবস্থান গ্রহণ করতে কার্যত বাধ্য করেছে।
নেপালে ভারতের প্ররোচনায় মাধেসিরা তাদের অবরোধ এখনও পর্যন্ত অর্থাৎ অনেকদিন ধরে অব্যাহত রাখার কারণে নেপাল সরকার এখন মাধেসিদের সঙ্গে সংবিধান নিয়ে আলোচনায় বসার ব্যবস্থা করেছে। এর ফলে হয়তো দেশের ৭টি অঞ্চলের সীমানা এবং অন্যান্য বিষয়ে তারা একটা সমঝোতায় আসতে পারে। মাধেসিদের দাবির একটা যৌক্তিকতাও থাকতে পার। কিন্তু তারা অন্য একটি দেশের প্ররোচনায় যেভাবে কাজ করেছে তার থেকে বোঝা যায়, ভবিষ্যতেও ভারত নেপালে তাদের হস্তক্ষেপের একটা কৌশল হিসেবে মাধেসিদের ব্যবহার করবে। তবে ভারতের এই হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও নেপাল সরকার যে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ এবং ধর্মবিযুক্ততার নীতি আর কোনোভাবেই পরিবর্তন করবে না, এটা নিশ্চিত। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে ভারতের চাপ সৃষ্টির আর কোনো কার্যকারিতা নেই। নেপালের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রধান কারণ।
এ ক্ষেত্রে একটি বিষয়ের উল্লেখ প্রাসঙ্গিক হবে। বর্তমানে নেপালের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল সংবিধানের ক্ষেত্রে রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্র বাতিল বিষয়ে ঐকমত্য হলেও প্রতিনিধিত্বের হিসেবে এ তিনটি দলের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। সশস্ত্র যুদ্ধ বন্ধ করে সাংবিধানিক রাজনীতিতে প্রবেশ করার পর প্রথম যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে এই দলটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সরকার গঠন করছিল। কিন্তু এখন তাদের সে অবস্থা আর নেই। তাদের শক্তি এখন অনেক কমে এসেছে। তাদের দলের মধ্যেও অনেক সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে অনেকেই নেপালে বিপ্লবী রাজনীতি এবং সে দেশে আশু বিপ্লবের সম্ভাবনা না দেখে তাদেরকে দোষারোপ করছে বা তাদের সমালোচনা করছে। তারা যে আগের মতো শক্তিশালী নয়, সাংবিধানিক রাজনীতিতে প্রবেশ করার পরিণতিতেই যে তাদের এই অবস্থা হয়েছে, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শুধু মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টিকে দোষারোপ করলে সেটা কতখানি সঠিক হবে, সেটাও দেখার বিষয়। নেপালের সমাজ খুব পশ্চাৎপদ এবং সেখানে সামন্ততান্ত্রিক প্রভাব খুব প্রবল। তাছাড়া নেপাল একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। এদিক দিয়ে সামগ্রিক বিচারে নেপালে সশস্ত্র যুদ্ধ দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়ার মতো বাস্তব শর্ত নেই। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ এখানে নেই। তবে এটুকু বলা চলে যে, যতদূর পর্যন্ত সশস্ত্র সংঘাত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, তারা ততদিন তা চালিয়ে নিয়ে শেষ পর্যন্ত সামগ্রিক পরিস্থিতির চাপে তাদের লাইন পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েই সাংবিধানিক রাজনীতিতে প্রবেশ করেছে। সাংবিধানিক রাজনীতিতে প্রবেশ করার পর এ রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব তাদের নেতৃত্বের ওপরও দেখা গেছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এ দলটির ভূমিকার মূল্যায়ন শুধু এর দ্বারা করাই যথার্থ হবে না। ঐতিহাসিকভাবে নেপালের রাজনীতিতে তারা যে বিরাট বড় রকম অবদান রেখেছে এটা অস্বীকারের উপায় নেই। নেপালে এতদিন একটি রাজতন্ত্র থেকেছে এবং হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে সামন্তবাদের যে শক্ত ভিত্তি সেখানে ছিল, সেটা দুর্বল করে নেপালে যে এখন গণতান্ত্রিক রাজনীতির শর্ত তৈরি হয়েছে, রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্র বাতিল হয়েছে, এটা এ ক্ষেত্রে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা ছাড়া কিছুতেই সম্ভব ছিল না। তারা সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে যে শক্তি অর্জন করেছিল সে শক্তির জোরেই তারা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতাসীন হয়েছিল এবং রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্রের উচ্ছেদ ছিল তাদের সংস্কারের শীর্ষ তালিকায়। এভাবে এ ধরনের সংস্কারের প্রচেষ্টা নেপালের ইতিহাসে আগে কোনোদিন দেখা যায়নি। তবে এ কাজ করতে গিয়ে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টিকে সংকটের মধ্যে পড়তে হয়েছে। এই সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিতে গিয়ে পার্টিগতভাবে তারা বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারা যে বর্তমান নেপালি পার্লামেন্টে তৃতীয় ও ছোট দলে পরিণত হয়েছে এর মধ্যে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যায়। তারা একেবারে শক্তিহীন না হলেও তাদের শক্তি এখন অনেক কমেছে, ভবিষ্যতে হয়তো আরও কমবে। কিন্তু নেপালের রাজনীতিতে তারা যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে, যে পরিবর্তনের সূচনা করেছে, তার ইতিবাচক মূল্যায়ন অবশ্যই দরকার।
তুলনা কোনো ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ সন্তোষজনক হতে পারে না। তবু তুলনার প্রয়োজন অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। নেপালে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষেত্রেও সেটা করা যেতে পারে। একাধিক প্রজাতির মাকড়সা আছে, বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পরই যারা নিজেরা মারা যায়। নেপালের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষেত্রেও ঘটেছে অনেকটা তাই। এ পার্টির মৃত্যু না ঘটলেও অবস্থা এখন খারাপ। কিন্তু এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, এই পার্টি সশস্ত্র সংগ্রাম পরিত্যাগ করে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ না করলে নেপালে রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্র উচ্ছেদ এখনও পর্যন্ত দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকত। এ দুই অর্জনের কৃতিত্ব মাওবাদী পার্টির। বাস্তবত যা দেখা যাচ্ছে তাতে মা মাকড়সা যেমন বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করে, সেভাবে নেপালকে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথে দৃঢ়ভাবে দাঁড় করিয়ে দিয়ে এই পার্টি নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন সংকটের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, যাতে একটি বিপ্লবী পার্টি হিসেবে তার কোনো ভবিষ্যৎ হয়তো আর না থাকতে পারে। তবে বর্তমানে এই অবস্থা প্রাপ্ত হলেও নেপালে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবর্তন হিসেবে তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকা অস্বীকারের উপায় নেই।
বদরুদ্দীন উমর
২৮.১২.২০১৫
সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
বাংলাদেশঃ ঝিনাইদহে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে
Posted: December 28, 2015 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি Leave a commentগত ১৯শে ডিসেম্বর শনিবার কালীগঞ্জ উপজেলার সুবর্ণচর গ্রামে একটি মাছ ঘেরের মালিককে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত মিন্টু(৪৫), ওই গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পুলিশ জানায়, স্থানীয় জনগণ বিকাল ৩টার দিকে মিন্টুর মাছের ঘেরের কাছাকাছি তার মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মিন্টুর প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে হত্যা করে থাকতে পারে।
অন্যদিকে স্থানীয়রা বলেন, মিন্টু পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী ছিলেন এবং তার মাছ ঘের থেকে বাড়ির পথে রওনা দেয়ার সময় তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাঁকে হত্যা করে থাকতে পারে।
অনুবাদ সূত্রঃ
http://www.thefinancialexpress-bd.com/2015/12/19/6445
মরক্কোঃ কমরেড ‘সাঈদা মেনেভি’ ও ‘নাদিয়া আদায়া’ লাল সালাম
Posted: December 28, 2015 Filed under: ছবির সংবাদ, নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: নাদিয়া আদায়া, সাঈদা মেনেভি, morocco, Najia Adaya, Saida Menebhi Leave a commentএই ১১ই ডিসেম্বর ২০১৫, মরক্কোর কারাগারেই ৪০ দিন অনশন করার পর মৃত্যুবরণ করা বিপ্লবী কর্মী সাঈদা মেনেভির ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ২৫। সাঈদাকে গ্রেফতার করে, নির্যাতন কেন্দ্র ‘দেরব মৌলে চেরিফ’ এ নিয়ে নির্যাতন করা হয়। তিনি বিপ্লবী সংগঠন ‘ইলা আল আমাম (ফরোয়ার্ড)’ এর একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
এ ছাড়াও ১১ই ডিসেম্বর মরোক্কো জাতীয় স্নাতক বেকার সমিতি(ANDCM)’র কর্মী নাদিয়া আদায়ার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ANDCM এর মত প্রকাশের উপর নিপীড়ক বাহিনীর সহিংস হস্তক্ষেপে ফলে নাদিয়া আদায়া মারা যান।
‘লাল সংবাদ‘ মরক্কোতে সামাজিক ন্যায়বিচার, মর্যাদা, সমতা ও স্বাধীনতার জন্য বিগত এবং আজকের মধ্যে সংগ্রামরত ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে।
অনুবাদ সূত্রঃ http://www.signalfire.org/2015/12/27/vdb-paris-press-statement-on-the-death-anniversaries-of-saida-menebhi-and-najia-adaya/
মিন্দানাওয়ে ফিলিপিনের কমিউনিস্ট পার্টি(CPP)’র [মাওবাদী] সদস্যপদ ৪৭ শতাংশ বেড়েছে
Posted: December 28, 2015 Filed under: অনুবাদ, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: ফিলিপিন মাওবাদী, CPP, NDFP, NPA Leave a commentদাভাও শহর – এশিয়ার দীর্ঘতম চলমান ফিলিপিন মাওবাদী বিপ্লবের ৪৭তম বার্ষিকীতে মিন্দানাও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ফিলিপাইনের কমিউনিস্ট পার্টি(CPP)র সদস্যপদ এই বছরে ৪৭ শতাংশ বেড়েছে।
CPP উত্তর কেন্দ্রীয় মিন্দানাওয়ের মুখপাত্র নরসেন মাংগুবাট এক বিবৃতিতে জানান, “আগের বছরের তুলনায় এই বছর পার্টির শাখা সংখ্যা ৪০% এবং পার্টির সদস্যপদ ৪৭% বৃদ্ধি পেয়েছে”।
মাংগুবাট দাবী করেন, পুরো অঞ্চলে তাদের গেরিলা যুদ্ধাবস্থা ২৮% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আমাদের জনগণকে সংগঠিত করা ৩৯% বেড়েছে। নিউ পিপলস আর্মি(NPA)’র বিভিন্ন সক্রিয় অপারেশনের ফলে গ্রামাঞ্চলে আরো পার্টি শাখার বিস্তৃতি ও সদস্যরা এসেছে।
মাংগুবাট বলেন, “এই বছর আর্মি, পুলিশ, আধাসামরিক দল ও বিভিন্ন ডাকাত ও প্রতিক্রিয়াশীল গ্রুপের বিরুদ্ধে ১০৮টি সামরিক অ্যাকশন করা হয়েছে”। তিনি বলেন, NPA যোদ্ধাদের এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রাইফেল (HPR) যথাক্রমে, ১৪% এবং ১২% হারে বেড়েছে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের কর্মকর্তা ও যোদ্ধাদের জন্য রাজনৈতিক-সামরিক প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে যাচ্ছি, আমরা আঞ্চলিক পর্যায়ে নীচের স্তর থেকেই কমান্ড সিস্টেমকে জোরদার করার সংগ্রাম করছি। পৌর কমান্ড সম্মেলন সহ প্রতিটি স্তরেই আমাদের জনমিলিশিয়াদের নিয়মিত ভাবে কমান্ড সম্মেলন করা হয়” ।
মাংগুবাট বলেন, মজুরী বাড়ানো, কারখানা ফি কমানো, খামার ও কৃষি পণ্যের দাম বৃদ্ধি, সুদের হার কমানো, ধান ক্ষেতে শ্রমিকের palay শেয়ার বৃদ্ধি, রক্ষণাবেক্ষণকারীদের শেয়ারের বৃদ্ধি ও সমবায় চালু এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যৌথ খামার” -পার্টির এই সকল কৃষি ভিত্তিক সংগ্রামে ১০,০০০ বেশী জনগণ উপকৃত হয়েছে।
এক সেনা কমান্ডারের দাবী করা -“গ্রামাঞ্চলে উন্নয়নের কারণে বিদ্রোহীদের সশস্ত্র সংগ্রাম এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে” এই মিথ্যা বক্তব্যের বিপরীতে পার্টির বিকাশের উল্লেখিত তথ্য/পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে মাংগুবাট আসল সত্যটি তুলে ধরেন।
অনুবাদ সূত্রঃ http://davaotoday.com/main/politics/47-more-communists-in-a-mindanao-region/