মাওবাদী রাজবন্দীদের অনশনের পরেও টনক নড়ছে না আলিপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষের
Posted: February 8, 2018 Filed under: গণযুদ্ধের সংবাদ, ভারত, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: মাওবাদী রাজবন্দী Leave a commentমিন্টু বিশ্বাস, ৮ ফেব্রুয়ারী, কলকাতা: সুদীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষী শতাব্দী প্রাচীন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে মাওবাদী ৩ রাজবন্দীর ১৪ দিন অনশনের পরেও উদাসীন কারা কর্তৃপক্ষ। বন্দীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এই অনশনের কোন গুরুত্ব দিতে নারাজ জেল সুপার ।
গত ২৬শে জানুয়ারি দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন থেকে মাওবাদী রাজনৈতিক বন্দী মনসারাম হেমব্রম (বিকাশ ), বিমল মল্লিক ও অনুপ রায় বন্দী অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে অভুক্ত অনশন শুরু করলে জেল কর্তৃপক্ষ সমস্ত আইন কে থোড়াই কেয়ার করে নুন্যতম মেডিকেল চেকআপ পর্যন্ত করেনি। অনশনরত অবস্থায় বিমল গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাদের দাবী দাওয়ার দিকে কোন কর্নপাত করেনি জেল সুপার। এমতাবস্থায় রাজবন্দীদের পরিবার এবং শুভাকাঙ্খীরা মানবধিকার রক্ষা কমিটির সাথে যোগাযোগ করলে গতকাল কয়েকটি মানবধিকার রক্ষা কমিটি জেলের সামনে জমায়েত হন। অবিলম্বে অনশনরত বন্দীদের সাথে কথা বলে তাদের দাবী দাওয়ার সুমীমাংসা করার ডেপুটেশন জমা দিতে চাইলে গেটে ঢোকার আগেই জেল কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। জেল সুপারের সাথে কথা বলতে চাইলে ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের বসিয়ে রাখা হয় । এরপর উত্তেজিত মানবধিকার কর্মীরা পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করলে সুপার তাদের সাথে কথা বলতে রাজি হয় । ৫ সদস্যের টিম, সুপারের সাথে আলোচনার পর জানান ‘কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটা নিয়ে ভেবে দেখবে এবং তাদের সমস্ত দাবী মীমাংসা করার চেষ্টা করবে’। এদিন জেলগেটের বাইরে প্রিজন ভ্যানে বন্দীদের সাথে কথা বললে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বন্দী খুবই দুঃখের সাথে একগাদা অভিযোগ তোলেন। খাবারের নিম্নমান, জেলা পুলিশের বিনা কারণে অমানবিক নির্যাতন, মেরে নেশাদ্রব্য রাখার কথা স্বীকার করানো, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া, ইউটিলিটি আর কনভিট বৈষম্যকে জেল পুলিশের সমর্থন করা সবকিছুই মিলিয়ে বন্দী আইনের তোয়াক্কা না করা আলিপুর জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠছে মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থতার প্রশ্ন চিহ্ন ।
সূত্রঃ https://peoplescreativemedia.blogspot.com/2018/02/blog-post.html?m=1
চারু মজুমদারের সংগৃহীত রচনা সংকলন: ‘যুক্তফ্রণ্ট ও বিপ্লবী পার্টি’
Posted: February 8, 2018 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad, সাহিত্য ও সংস্কৃতি | Tags: চারু মজুমদারের সংগৃহীত রচনা সংকলন, যুক্তফ্রণ্ট ও বিপ্লবী পার্টি Leave a commentযুক্তফ্রণ্ট ও বিপ্লবী পার্টি
যে পার্টি সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করছে না, তার পক্ষে যুক্তফ্রণ্টের আওয়াজ অর্থহীন, কারণ স্বাধীন নীতির ভিত্তিতে কোন যুক্তফ্রন্টই তার পক্ষে সৃষ্টি করা সম্ভব নয়; ফলে অনিবার্যভাবে তাকে লেজুড়ে পরিণত হতে হয়। সফল যুক্তফ্রণ্ট গড়ে উঠতে পারে একমাত্র সফল সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনার মাধ্যমে। যুক্তফ্রণ্টের প্রধান কথা, শ্রমিকশ্রেণী ও কৃষকশ্রেণীর যুক্তফ্রণ্ট; এই যুক্তফ্রণ্টই পারে সংগ্রামী মধ্যবিত্তশ্রেণীকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং যার সাথে ঐক্য সম্ভব সাময়িকভাবে হলেও তার সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে। এ কাজ করতে পারে একমাত্র বিপ্লবী পার্টি এবং পার্টি বিপ্লবী কিনা এই যুগে তার একমাত্র মানদ- হচ্ছে সেই পার্টি সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করছে কিনা।
যুক্তফ্রণ্টের নামে ভারতবর্ষে যা ঘটছে সেগুলি হল কতকগুলি প্রতিক্রিয়াশীল পার্টির ক্ষমতার জন্য জোটবদ্ধ হওয়া। এই একজোট হওয়ার একটিই লক্ষ্য, তা হল, মন্ত্রিসভা দখল হবে কিনা। এই একই দৃষ্টিভঙ্গীতে তথাকথিত বামপন্থী পার্টিগুলিও জোট বাঁধছে, যেমন বেঁধেছিল পশ্চিম বাংলায়, কেরালায়। কোনও বামপন্থা যে এদের একত্রিত করেনি তা এঁদের মন্ত্রিসভার কাজের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে এবং করলে তার প্রতিক্রিয়া হয়েছে মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে, কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশে জনসঙ্ঘও শক্তিবৃদ্ধি করতে পেরেছে। বাংলাদেশে যুক্তফ্রণ্টের ৯ মাসের শাসনে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে ‘বামপন্থী’ পার্টিগুলি সবাই শ্রমিক ও কৃষকের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে বিভ্রান্ত করার কাজ নিয়েছে। এ কাজ কংগ্রেস করতে পারে না, কাজেই তথাকথিত বামপন্থী পার্টিগুলি এই দায়িত্ব নিয়েছে যাতে ভারতবর্ষের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতে ক্ষমতা নিরঙ্কুশ হয়। বাম কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দ একাজ সবচেয়ে বিশ্বস্তভাবে করছে, তাই চ্যবন আজ নতুন করে বাম কমিউনিস্টদের সম্পর্কে চিন্তা করছে। চিন্তা যে করছে তার প্রমাণ পাওয়া গেল বর্ধমান প্লেনাম শুরু হতে না হতে দীনেশ সিং জ্যোতি বসুকে ডেকে গোপনে বৈঠক করলো। অর্থাৎ প্রতিক্রিয়াশীল কংগ্রেস জ্যোতিবাবুদের নির্দেশ দিলো চায়ের কাপে তুফান তোল কিন্তু বাগ (Split) হতে দিও না। বর্ধমানে আমরা মালিকদের বেটনে সেই বাঁদর নাচ দেখলাম। বাংলাদেশের যুক্তফ্রণ্ট আমলে আমরা কংগ্রেসী খাদ্য নীতি চালু হতে দেখেছি। এবং তার দায়িত্ব মন্ত্রিসভার বাঘা বাঘা বিপ্লবীরা নির্বিকারে প্রফুল্ল ঘোষের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলো। মন্ত্রিসভায় প্রফুল্ল ঘোষের যদি একটি শ্রেণীর স্বার্থ দেখার অধিকার থাকে, তা হলে দরিদ্র কৃষক শ্রেণীর স্বার্থ দেখার অধিকার হরেকৃষ্ণ কোঙারের থাকলো না কেন? কারণ দরিদ্র কৃষকদের স্বার্থ হরেকৃষ্ণবাবুদের শ্রেণীস্বার্থ বিরোধী। কাজেই প্রত্যেকটি যুক্তফ্রণ্টের শরিক দরিদ্র শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণীর শত্রু, কাজেই প্রত্যেকটি যুক্তফ্রণ্টের শরিক দরিদ্র শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণীর শত্রু, কাজেই প্রত্যেকটি যুক্তফ্রণ্টের শরিক দরিদ্র শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণীর শত্রু, কাজেই যুক্তফ্রণ্টে কোনও বিরোধ হয় নি, এবং এই শ্রেণীশত্রুতার ভিত্তিতেই এই ফ্রণ্ট গড়ে উঠেছে। বিহার, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান বা মাদ্রাজে এই যুক্তফ্রণ্টের শ্রেণী চরিত্র বুঝতে বিশেষ অসুবিধা হয় না, কারণ সামন্ত শ্রেণীগুলি ও প্রতিক্রিয়াশীল পার্টিগুলির সহযোগিতায় এই যুক্তফ্রণ্ট গড়ে উঠেছে। একজন বা দুজন বাম বা ডান কমিউনিস্ট এই মন্ত্রিসভায় ঢুকে তাদের নিজেদেরই শ্রেণীচরিত্র স্পষ্ট করে দিয়েছে। কিন্তু বাংলা বা কেরাল এই যুক্তফ্রণ্টকে বিশেষভাবে লক্ষ্য করার দরকার আছে, কারণ ও’দুটো জায়গায়ই বামপন্থী কমিউনিস্টরাই বৃহত্তম দল। ফলে ও’দুটো জায়গায় এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে পার্টিগতভাবেই এই কমিউনিস্টরা কমিউনিস্ট নামের অযোগ্য এবং এরা দেশী-বিদেশী প্রতিক্রিয়াশীল ও সংশোধবাদী সোভিয়েত নেতৃত্বের পোষা কুকুর। বর্ধমান প্লেনামে এই স্বরূপ যাতে বেশী প্রকাশ হয়ে না পড়ে তাই দীনেশ সিং দেশী ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার পক্ষ থেকে জ্যোতি বসুকে সজাগ করে দিতে এসেছিল। কাজেই বর্ধমানে আন্তর্জাতিক সংশোধনবাদের চক্রান্ত সফল হয়েছে। তারা নিঃশ্বাস ফেলে বেঁচেছে যে সাময়িকভাবে হলেও ভারতবর্ষের বিপ্লবী জনতাকে একটা ধোঁকা দেওয়া গেছে। এখন তারা সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে পার্টির বিপ্লবী অংশের বিরুদ্ধে এবং সেখানেও তারা প্রয়োজনবোধে তাদের অনুচর প্রবেশ করিয়ে রাখবে যাতে সময় বুঝে সমস্ত নয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের কার্যক্রমকে ভিতর থেকে বানচাল করে দেওয়া যায় এবং বিপ্লবী অংশকে লোকচক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা যায়। এ কৌশলও আন্তর্জাতিক সংশোধনবাদ অনেকদিন প্রয়োগের মারফৎ শিখেছে। কাজেই ‘উদারনীতির বিরুদ্ধে লড়াই কর’ [Combat libralism] নামক চেয়ারম্যানের লেখাটা আজ প্রত্যেকটি বিপ্লবীর অবশ্য পাঠা এবং তা ছেকে শিক্ষা গ্রহণ করাও অবশ্য কর্তব্য। চীনের মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব আমাদের শিখিয়েছে, আভ্যন্তরীণ সংগ্রাম একটা অবশ্য করণীয় কাজ। একাজে গাফলতি করলে ফল অনিবার্যভাবে বিপ্লবের বিরোধীদের পক্ষে চলে যায়।
বিপ্লবী পার্টির যুক্তফ্রণ্ট গড়তে গেলে প্রথমেই দরকার দেশের আভ্যন্তরীণ শ্রেণীগুলির বিচার করা। আমরা জানি, আমাদের দেশের বিপ্লব নয়াগণতান্ত্রিক, কারণ গণতান্ত্রিক বিপ্লব আমাদের দেশে অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। বুর্জোয়াশ্রেণী এই গণতান্ত্রিক বিপ্লব সফল করতে পারে না। ২/১ টা ছোট দেশে এক বিশেষ পরিস্থিতিতে ফিদেল কাস্ত্রোর মতো পোর্টি-বুর্জোয়াশ্রেণীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লব সাময়িক সাফল্য অর্জন করতে পারে, কিন্তু গণতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রধান কাজ সামন্তশ্রেণীর হাত থেকে সমস্ত ক্ষমতা কেড়ে জমি জাতীয়করণের ভিত্তিতে পুরোপুরি ধনতান্ত্রিক বিকাশ আজকের যুগে সে দেশেও সম্ভব নয়। কাজেই কাস্ত্রো জমি ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ না করে, বিপ্লবের ফাঁকা বুলি আওড়ে যাচ্ছেন এবং দেশকে একটা না একটা বৃহৎ শক্তির তাঁবে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। আলজেরিয়ার বিপ্লবেরও মূল শিক্ষা এটাই। ভারতবর্ষের মতো বিরাট দেশে পোটি-বুর্জোয়ার নেতৃত্বে বিপ্লব সফল করার স্বপ্ন দেখা নেহাৎই কল্পনা-বিলাস। এখানে গণতান্ত্রিক বিপ্লব সফল হতে পারে একমাত্র নয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মারফৎ। নয়া-গণতান্ত্রিক বিপ্লব বলছি কাকে? যে বিপ্লব শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বে ব্যাপক কৃষকশ্রেণীর সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশী ও বিদেশী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলির বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম মারফৎ সফল হতে পারে। এই বিপ্লব বিপ্লবী শ্রমিকশ্রেণীর মিত্র কে? মূলত: সমগ্র কৃষকশ্রেণী অর্থাৎ দরিদ্র, ভূমিহীন কৃষক ও ব্যাপক মধ্যকৃষক। ধনীকৃষকের একটা অংশও সংগ্রামে একটা বিশেষ স্তরে যোগ দিতে পারে। এবং এর সাথে থাকবে মেহনতী মধ্যবিত্তশ্রেণী। এই মুখ্য তিনটি শ্রেণী বিপ্লবের প্রধান শক্তি এবং এই তিনটি শ্রেণীর মছ্যে কৃষকশ্রেণীই সবচেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণী হওয়ায় তাদের উপরই বিপ্লব প্রধানত: নির্ভরশীল। ঐ মূল শ্রেণীকে কতখানি বিপ্লবের পক্ষে আনা গেল তারই উপর বিপ্লবের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। কাজেই শ্রমিকশ্রেণীকে নেতা হিসাবে এবং মধ্যবিত্তশ্রেণীকে বিপ্লবী শ্রেণী হিসাবে এই কৃষকশ্রেণীর সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সেই ঐক্যই হবে যুক্তফ্রণ্ট। যুক্তফ্রণ্টের এটাই একমাত্র মার্কসবাদী ব্যাখ্যা।
এই বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে পরিচালিত সশস্ত্র সংগ্রাম মারফৎ যে যুক্তফ্রণ্ট গঠিত হবে, সেই বিপ্লবী পার্টিই বিভিন্ন জাতীয় অভ্যুত্থানগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। বিভিন্ন পোর্টি-বুর্জোয়াদের নেতৃত্বে যে সব জাতীয় সংগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে, সেগুলির বিজয় নির্ভর করে কতখানি এইসব জাতীয় আন্দোলনগুলি শ্রেণীসংগ্রামে পরিণত হচ্ছে এবং কতখানি শ্রেণী-সংগ্রামে তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে তারই উপর সম্পূর্ণ বিজয় নির্ভর করছে। এইসব জাতীয় সংগ্রাম সম্পর্কে বিপ্লবী পার্টিকে খুবই দ্ব্যর্থহীন ভাষার ঘোষণা করতে হবে যে, সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং প্রত্যেকটি জাতিসত্ত্বার স্বাধীন ও স্বতন্ত্র হওয়ার পূর্ণ অধিকার আছে এবং থাকবে। এই নীতির মাধ্যমে একটি বিপ্লবী পার্টি স্বচ্ছন্দে নাগা…মিজো প্রভৃতি জাতীয় সংগ্রামগুলির সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। এবং এরকম যুক্তফ্রণ্ট গড়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে যে প্রত্যেকটি জাতি-সত্ত্বা সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করছেন। অনেকের ধারণা আছে, কমিউনিস্ট পার্টি বিভিন্ন জাতীয় আন্দোলনের নেতা হবে এবং সেই জাতিসত্ত্বাগুলির আন্দোলনের সময়ই হবে নায়াগণতান্ত্রিক বিপ্লব। এই চিন্তাধারা ভুল। কমিউনিস্টরা জাতীয় আন্দোলনের নেতা হবে না। যেখানে জাতীয় সংগ্রাম আছে কমিউনিস্টরা তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হবেন, কিন্তু কমিউনিস্টদের দায়িত্ব শ্রেণী-সংগ্রাম গড়ে তোলা-জাতীয় সংগ্রাম নয়। শ্রেণী-সংগ্রামে বিভেদ দূর কারর জন্য কমিউনিস্টদের ঘোষণা করতে হবে; প্রত্যেকটি জাতিসত্ত্বার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, এমন কি বিচ্ছিন্ন হবার অধিকার রয়েছে। এই আওয়াজ খন্ড জাতিগুলিকে একটা শোষণ থেকে আর একটা শোষণের খপ্পরে পড়ছি না-এই বিশ্বাস দেবে। এবং তখনই কেবল তারা শ্রেণী সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করতে পারে। আমরা যদি জাতীয় আন্দোলনের নেতা হবার চেষ্টা করি তাহলে আমরা সে নেতা হতে পারবো না; আমরা বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার পোর্টি বুর্জোয়ার লেজুড়ে পরিণত হব। এই ঘোষণার পর শ্রেণী-সংগ্রামের নেতা হিসাবে আমরা যতই এগিয়ে যাব ততই বিভিন্ন জাতী-সত্ত্বার সংগ্রামের চরিত্র পরিবর্তিত হতে থাকবে; এবং বিজয়ের পূর্ব মূহুর্তে প্রত্যেকটি জাতিসত্ত্বার আন্দোলন শ্রেণী সংগ্রামে রূপান্তরিত হবে।
২০শে মে, ১৯৬৮