বাংলায় মাইন ফাটিয়ে ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যাওয়া বা ওড়িশায় খতম করে পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দেওয়া মাওবাদীদের পুরনো ছক বলে মনে করে, এই কৌশলে এ বার ছেদ টানতে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে মাওবাদী দমনের একটি পৃথক ব্যবস্থা গড়ার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
মাওবাদী দমন সংক্রান্ত উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার আর কে সিংহ নবান্নকে জানিয়েছেন, তিন রাজ্যের পুলিশ, গোয়েন্দা এবং বিশেষ ঘাতক দলকে নিয়ে তৈরি করা হবে জয়েন্ট কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার। ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমে হবে কম্যান্ডের সদর কার্যালয়। তার প্রধান হবেন জেলার এসপি। কেন্দ্রের প্রস্তাবে আপত্তি নেই রাজ্যের। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এ রাজ্যে মাওবাদীদের তেমন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু মাঝেমধ্যে ঝাড়খণ্ড বা ওড়িশা কেউ সীমানা পেরিয়ে ঢুকে এখানে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে। যদি একটি কম্যান্ড তৈরি করা যায়, তা হলে মাওবাদীদের কৌশল ভেস্তে দেওয়া যাবে।’’
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এখন জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের তেমন গতিবিধি নেই। শুধু মাত্র বীরেনের নেতৃত্বে একটি স্কোয়াড মাঝে-মাঝে ঘোরাফেরা করছে। কোনও কোনও নেতা মালদহে গিয়ে দু’এক বার বৈঠকও করে এসেছেন। হিসেব বলছে, রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে ২৯১টি মাওবাদী হামলা বা দমন সংক্রান্ত মামলা চলছে। সব মিলিয়ে ২৮২ জন মাওবাদী জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় বন্দি রয়েছে ৮২ জন। মাওবাদী দমনে রাজ্যে এখন ৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জঙ্গলমহলে মোতায়েন রয়েছে।
এক পুলিশ কর্তার পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ধারাবাহিক তল্লাশি অভিযানের ফলে জঙ্গলমহলে আপাতত নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে মাওবাদীরা। তারা বিভিন্ন জেলা শহর ও কলকাতায় গণ সংগঠনের আড়ালে নতুন করে আন্দোলনের পথ খুঁজছে। তারা পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া, পিডিসিআই, জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ, ইসলামিক স্টুডেন্ট ঐক্যের মতো বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলছে। ভাঙড়ে এই দুই শক্তির বোঝাপড়ায় আন্দোলন হয়েছে বলে ওই গোয়েন্দা কর্তা জানান।
২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সারা দেশে নিহত মাওবাদীর সংখ্যা ১৫০গুণ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এর রিপোর্ট অনুযায়ী মঙ্গলবার লোকসভায় এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির। ২০১৫ সালে নিহত মাওবাদীর সংখ্যা ছিল ৮৯। ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২২২। গত ৬ বছরে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা। মন্ত্রি জানিয়েছেন অতিবাম সক্রিয় অঞ্চলগুলিতে রাস্তা, ব্রিজ সহ যোগাযোগের পরিকাঠামোর পিছনে ১১ হাজার ৭২৪ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করেছে সরকার।
ছত্তিশগড়ে ফের পুলিসের গুলিতে নিহত মাওবাদীরা। নারায়াণপুরে পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৭ মাওবাদী। পুলিসের স্পেশাল ডিজি পিটিআইকে জানিয়েছেন, পুষ্পল গ্রামের জঙ্গলে পুলিসের সঙ্গে মাওবাদীদের নাকি প্রবল সংঘর্ষ হয়ে সেখানেই নিহত হন ওই মাওবাদীরা। মাওবাদী অধ্যুষিত অবুঝমারের অন্তর্ভুক্ত পুষ্পল রায়পুর থেকে প্রায় ৩৫০ কিমি দূরে অবস্থিত। ছত্তিশগড়ে পুলিসের গুলিতে মাওবাদীদের নিহত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে বারবারই অভিযোগ উঠেছে ভূয়ো সংঘর্ষের। এরকমই সংঘর্ষের তথ্য অনুসন্ধান করতে যাওয়া তেলেঙ্গানা ডেমোক্র্যাটিক ফোরামের ৭জনকে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে ছত্তিশগড় পুলিস। তাদের এখনও জামিন হয়নি।
এদিকে ছত্তিশগড়ের সুকমার জঙ্গলে আধাসামরিক বাহিনীর ২১২ ব্যাটালিয়নের একটি টহলদারি দল কিস্টারাম থানা এলাকায় রাস্তা খোলার ডিউটিতে গিয়েছিল। পাগাইগুড়া গ্রামের কাছে একটি জায়গা ঘিরে ফেলার সময় সেখানে ভুল করে মাওবাদীদের পুঁতে রাখা প্রেসার বোমা(আইইডি) পা দিয়ে ফেলেন এক জওয়ান। বিস্ফোরণে ঘনশ্যাম নামে ওই কনস্টেবলের একটি পায়ের নীচের অংশ উড়ে যায়।
শীর্ষ মাওবাদী নেতা কুপ্পু দেবরাজ ও নারী মাওবাদী অজিথা পুলিসের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজায়ন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী মাওবাদী সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে দুজনই খুবই অসুস্থ ছিলেন। তাই শারীরিকভাবে বন্দুক সংঘর্ষ যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভবই ছিল না। ওই দুই মাওবাদীকে কমান্ডোরা ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে বলে অভিযোগ মাওবাদীদের। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী এই তদন্তের নির্দেশ আসলে সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বলে মনে করছে মানবাধিকার সংগঠন। বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা। কংগ্রেসের তরফেও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে একই দাবি জানান হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিলাম্বুরের জঙ্গলে কম্যান্ডোদের গুলিতে নিহত হন ২ মাওবাদী ।
কেরলের মাওবাদী নেতা রূপেশ সহ ৫ মাওবাদীর বিরুদ্ধে ৪২০০/চার হাজার দুশো পাতার চার্জশিট দিল পুলিস। দ্য হিন্দুতে প্রকাশিত হয়েছে এই রিপোর্ট। গত বছর মে মাসে কোয়েম্বাটরের কাছে ওই ৫ মাওবাদীকে গ্রেফতার করে পুলিস। কেরলের ওই মাওবাদী নেতা আদালতে অভিযোগ করেছেন কয়েক দিন আগে নিলাম্বুরের জঙ্গলে ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যা করা হয়েছে সিপিআই মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সহ ২ জনকে। পুলিস তাদেরও ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যার ভয় দেখাচ্ছে বলে আদালতে জানান গ্রেফতার হওয়া অন্য মাওবাদীরা।
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে মাওবাদী গেরিলাদের হামলায় দুই বিএসএফ জওয়ান খতম এবং ৪ জন আহত হয়েছে। আজ (শনিবার) ছত্তিসগড়ের কাঙ্কের জেলায় মাওবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আহত জওয়ানদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হতাহত জওয়ানরা ১২২ ব্যাটেলিয়ানের সদস্য। নিহতরা হলেন- বিজয় কুমার এবং মুকেশ।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ, ছোটেবেটিয়ার কাছে বেচঘাট এলাকায় বিএসএফ জওয়ানদের সঙ্গে গতকাল রাত থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। ভোররাত আড়াইটে নাগাদ চলা সংঘর্ষে ৬ জওয়ান আহত হয়। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে রাইপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাইপুরে যাওয়ার সময় দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়। আহত জওয়ানরা হলেন- মনোজ কুমার, সিপ্তেন থমসন, জগদীশ কুমার এবং বাপ্পা দেবনাথ। সংঘর্ষে মাওবাদীদের পক্ষেও কয়েকজন আহত হয়েছে। হামলাকারী মাওবাদীদের খোঁজে নিরাপত্তা বাহিনী সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে।
এদিকে, অন্য একটি ঘটনায় শুক্রবার ছত্তিশগড়ের সুকমা জেলায় মাওবাদীদের পেতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে ১ সিআরপিএফ জওয়ান নিহত এবং ৪ জওয়ান আহত হয়। এখানে একটি সড়ক নির্মাণের জন্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী আইইডি’র কবলে পড়লে হেড কনস্টেবল রঙ্গা রাঘব প্রাণ হারান। এদিন সিআরপিএফ-এর ২১৭ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানরা টহল দেয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটলে ডেপুটি কমান্ডার শ্রীনিবাস, ডেপুটি কমান্ডার প্রভাত ত্রিপাঠি এবং হেড কনস্টেবল রঙ্গা রাঘব এবং অন্য দুই জওয়ান আহত হয়।
২০১৫ সালে ছত্তিসগড়ের বস্তার অঞ্চলে মাওবাদীদের আক্রমণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৭ জন সদস্য নিহত হয়েছে, গুরুতর জখম হয়েছে ১১৫ জন, ৪৭ জন ব্যক্তিকে পুলিশের চর অভিযোগে খতম করেছে মাওবাদীরা। কথিত মাওবাদী নামে আত্মসমর্পণ করেছে ৩২৭জন! পক্ষান্তরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ৪৬ জন মাওবাদী, উদ্ধার করা হয়েছে একটি একে -47, একটি SLR, একটি 303 বন্দুক এবং চারটি 9 মিমি পিস্তল সহ ১৬৭টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়- ছত্তিসগড় পুলিশের মাওবাদী দমন ইউনিট (Anti-Naxal Operation (ANO) unit) গত বুধবার এই পরিসংখ্যানটি প্রকাশ করেছে।
অপরদিকে বিহারে ২০১৫ সালে ৫২৭ জন মাওবাদীকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। যদিও ২০১৫ ও ২০১৪ সালে মাওবাদীদের কোন প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী। এখানে গত কয়েক বছর ধরে বেশ কয়েকটি গ্রামে ” প্রতিষ্ঠা করেছে মাওবাদীরা। ২৩টি মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় ৮৫টি নতুন থানা স্থাপন করেছে বিহার সরকার, এর মধ্যে নির্মাণাধীন ৪৩টি থানার কাজ ২০১৬ সালের মার্চের মধ্যে শেষ হবে বলে সুত্র জানাচ্ছে। এ ছাড়াও রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে সবচেয়ে বেশী মাওবাদী অধ্যুষিত ৬টি জেলায় আরো ৪০টি নতুন থানার অনুমোদন চেয়েছে।
শনিবার স্থানীয় একটি আদালতে হাজির করা হলে গোলাঘাট পুলিশ মাওবাদী নেতা আদিত্য বোরার দশ দিনের জন্য রিমান্ডের অনুমতি পেয়েছে। তার দুই সহযোগীকেও অধিকতর রিমান্ডের জন্যে দেরগাও থেকে পুলিশের হেফাজতে নেয়ার অনুমতি দিয়েছে।
এদিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি দল শনিবার থেকে আদিত্য ও তার দুই সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে কর্মকর্তারা রাজ্যের ক্রমবর্ধমান মাওবাদী কার্যক্রম উপর অনেক গোপন তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি করেন।
জঙ্গলমহলের ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় মাওবাদী তৎপরতার কথা বেশ কিছু দিন ধরেই জানাচ্ছিল গোয়েন্দারা। নানা জায়গায় মাওবাদীদের পোস্টারও মিলছিল। এ বার খাস ঝাড়গ্রাম শহরেই একাধিক জায়গায় মিলল মাওবাদীদের নামে লেখা পোস্টার। সেই পোস্টারের একেবারে প্রথমেই লেখা— ‘মাওবাদী প্রতিষ্ঠা সপ্তাহের শেষ দিন রবিবার। তাই ঝাড়গ্রাম শহরে আমাদের উপস্থিতি জানালাম।’
রবিবার রাতেই ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র বাছুরডোবা এবং শহরের শেষ প্রান্তে জামদা এলাকায় মাওবাদীদের ওই পোস্টারগুলি লাগানো হয়েছিল। সোমবার সকালে সেগুলি দেখেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে পোস্টারগুলি খুলে নিয়ে যায়। পুলিশ অবশ্য এটা মাওবাদীদের কাজ বলে মানতে চায়নি। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার ভারপ্রাপ্ত সুপার ভারতী ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘দুষ্টচক্রের লোকজন এই কাজ করেছে। এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিতও করা হয়েছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’
অক্টোবরের গোড়াতেই ঝাড়গ্রাম সফরে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পুলিশ যাই বলুক তার আগে মাওবাদীদের পোস্টার উদ্ধারে অরণ্যশহরে শোরগোল পড়েছে। ঝাড়খণ্ড সীমানা ঘেঁষা এলাকা থেকে এ বার একেবারে খাস ঝাড়গ্রাম শহরে মাওবাদীদের পোস্টার মেলায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বাছুরডোবায় একটি বাড়ির পাঁচিলে এবং জামদায় কালভার্টে লাগানো পোস্টারগুলি সিপিআই (মাওবাদী)-র ঝাড়গ্রাম শহর কমিটির নামে দেওয়া হয়েছিল। সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা ছিল, ‘পুলিশ-প্রশাসন তৃণমূলে হয়ে কাজ করায় মাওবাদীদের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য নিয়েছে। সেই টাকা বিধানসভা ভোটে গুন্ডা বাহিনীর জন্য রাজ্য সরকার খরচ করবে। আর প্রচার করবে আদিবাসীদের উন্নয়ন করব। বাস্তবে কিছুই নেই।’ জঙ্গলমহলে কেন ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে পোস্টারে। আর সব শেষে জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।