কাশ্মীরি ছাত্র ইমরান খানের চিঠির বাংলা অনুবাদ

 

সকলের উদ্দেশ্যে,
আমি একজন কাশ্মিরি। আমি মনস্তত্ত্ব বিজ্ঞানের ছাত্র। যখন আমি ‘প্ররোচনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ’ বিষয়ে পড়ছিলাম তখন এই পঙক্তিটি নজরে আসেঃ “আমাদের খুব কমজনেরই আদেশ বা উপদেশ মেনে চলতে ভালো লাগে। আমরা প্রতিদিনই নানা বিজ্ঞাপন দাতা, রাজনৈতিক নেতা বা অন্যান্য ব্যক্তির সম্মুখীন হই যারা আমাদের মনোভাবকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এর মধ্যে যে কোন ক্ষেত্রে যদি আমাদের মনে হয় যে আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা সংকটে পড়ছে, তবে আমরা বিরক্তি ও অসন্তোষ অনুভব করি। সেক্ষেত্রে শেষ পরিণতি এই হয় যেঃ শুধু যে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলি তাই নয়, বরং তাদের অভিপ্রায়ের একেবারে বিপরীত অবস্থানটি আমরা নিয়ে থাকি। একেই সামাজিক মনস্তত্ত্ববিদরা বলেন “reactance”(Social Psychology 13thEd., Baron and Branscombe). ঠিক এমনি একটা জিনিস আজ কাশ্মীরে হচ্ছে। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যে জাতীয়তাবোধ, দেশভক্তি, (যাকে আমি বলছি ‘ভারততন্ত্র’) আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে, এবং তাই আমাদের পক্ষ থেকে বেড়ে চলেছে বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া। যত বেশি চাপ বাড়বে, ততই জোরালো হবে বিরুদ্ধ মতামত। অনেকের এই সরল ব্যাখ্যা পড়ে অস্বস্তি হতে পারে; তবে এখানকার বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে গেলে কিছু তিক্ত সত্যের সম্মুখীন হতে হবে।
যা কিছু সত্যি, তার সামনে এসে দাঁড়াতে হবে। এই তথ্য প্রযুক্তির ও সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, প্রতারনা করে, মিথ্যে বলে মানুষকে ভুলিয়ে রাখা যাবে না। আর সত্যি এটাই যে কাশ্মীর একটি বিতর্কের বেড়াজালে জর্জরিত এবং তার একমাত্র মীমাংসা হতে পারে কাশ্মীরের বাসিন্দাদের আকাঙ্ক্ষাকে মাথায় রেখে। এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে কাশ্মীরের উপর অধিকার একমাত্র কাশ্মীরের বাসিন্দাদেরই আছে। একদিকে বলো এটি তোমাদের দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, আবার এও বল যে তোমার প্রতিবেশি দেশ কাশ্মীরের জিওন কাঠিঃ তবে এভাবে আর কতদিন? আমাদের যেভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা জন্ম দিয়েছে একরাশ রাগ ও ঘৃণার। এখন কোনরকম সামরিক শক্তি, রাজনৈতিক চাল বা মিডিয়ার প্রচার আমাদের ধরে রাখতে পারবে না। যারা পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ বা ওয়াহাবি ইসলাম নিয়ে এখনও তত্ত্ব কপচাচ্ছেন তারা যতদিন খুশি সেই ভ্রমেই মগ্ন থাকুন। কিন্তু কাশ্মীরের পরিস্থিতি দেখে অবাক হওয়ার কথা নয়- এর সূত্রপাত সেই দিন থেকে যেদিন তোমাদের সরকার আমাদের স্বাধীনতা খর্ব করতে আরম্ভ করে।
যেভাবে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করা হচ্ছে তার থেকেই স্পষ্ট হয় যে গণতন্ত্রের মুখোশের আড়ালে আছে এক ফ্যাসিস্ট সত্তা। প্রতিবাদী ছাত্রসমাজের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তেমন পশুদের সাথেও করা হয়না। গণতান্ত্রিক আদর্শ কি তবে মৃত? আমাদের কি প্রতিবাদ করার অধিকার নেই? যখন সমস্ত রাজনৈতিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়, প্রতিবাদী কণ্ঠের টুঁটি চেপে ধরা হয়, তখন মানুষ প্রতিরোধ করবেনা এমনটা আশা করা হয় কিভাবে?
যারা ভোটের কম সংখ্যা, ছাত্র রাজনীতি বা নিরস্ত্র সংগ্রাম দেখে শোকাতর, তাদের বরং এই ভেবে শোক পালন করা উচিৎ যে তারা নিজে হাতে গনতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তোমরা মানুষের গণতন্ত্রের উপর বিশ্বাস উপড়ে নিয়ে এখন বলছ পুনরায় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতে! এখনো পর্যন্ত মূল বিষয়টিকে সম্বোধন না করে শুধু পরিস্থিতি সামলানোর প্রক্রিয়া তোমরা নিয়েছ। বলপ্রয়োগ কিংবা রাজনৈতিক চাল দিয়ে বিরোধ আটকাবার প্রচেষ্টা চলেছে শুধু; কোনভাবেই মূল সমস্যার সমাধান হয়নি।
তোমাদের সেনাবাহিনীর প্রতিও আমাদের একটা বার্তা-ও আছে। যদিও তারা আমাদের নিদারুণ নিপীড়ন করে চলে, তবু আমরা তাদের মুক্তির কামনা করি। তাদেরও পরিবার-পরিজন আছে, নেহাত পেটের দায়ে তারা এখানে। তাদের জানা দরকার যে সৈন্য তৈরি করা হয় যুদ্ধ করার জন্য। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ যায় শুধু তাদেরই, রাজাদের (আজকের রাজনৈতিক নেতাদের) গায়ে আঁচটুকু পড়েনা। সমস্ত বিড়ম্বনার মুখে তাদেরই পড়তে হয়-শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে থেকে টিভি শো-র যে পরিচালকরা মানুষকে প্ররোচিত করে চলে নির্বিকারে, তাদের নয়। আজ যে সৈন্যরা পৌরুষের বহিঃপ্রকাশ করছে, তাদেরই একদিন অবসর নিতে হবে। তখন পড়ে থাকবে শুধু আনুতাপ আর শূন্যতা। অত্যাচারিত নিরপরাধ মানুষের কান্নার স্মৃতি তাদের স্বস্তিতে থাকতে দেবে না। তাই আমরা যারা কাশ্মীরের জন্য লড়ছি, তারা তোমাদের পরিত্রাণেরও কামনা করি।
এবার প্রশ্ন করি তোমাদের সেইসব খবরের চ্যানেলের পরিচালকদের- তারা আমাদের জায়গায় থাকলে কি করত? আমরা এমন এক রাষ্ট্রকে কিভাবে সমর্থন করতে পারি যে নিজের দেশের লোকের বিরুদ্ধেই উঠে পড়ে লেগেছে? কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা করার আগে তারা বরং এখানে এসে কিছু বছর থাকুক! হয়ত তাহলে তাদের এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে আর নতুন কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবে না। এ কথা সত্যি যে কখনো কখনো এখানে ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উগ্র বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা হঠকারী বা হিংসা প্রিয়। আমরা একাধারে শ্বাসরুদ্ধ ও হতাশ। তোমাদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেখে দেখে আমরা ক্লান্ত আর তাই তোমাদের আর বিশ্বাস করিনা। তোমাদের নেতামন্ত্রী বা সামরিক বাহিনীকে গিয়ে প্রশ্ন করঃ ভারত কেন এখনও কাশ্মীরের সমস্যার সমাধানের দিকে এগোচ্ছে না? কেন সে শুধু জমি ধরে রাখতে চায়? কিন্তু মানুষগুলির সমর্থন আছে কি নেই তাকে উপেক্ষা করে? এই আচরণে কি লাভ হচ্ছে ভারতবর্ষের?
এত কিছুর পরেও সব সমস্যার জন্য তোমাদের দায়ী করা অনুচিত হবে। আমরা জানি যে আমাদেরই লোক আমাদের ব্যাপারে ভ্রমপূর্ণ বর্ণনা দেয় বিভিন্ন ফোরাম বা মিডিয়ায়। আমাদের নিজেদের নেতারা (বিশেষত মূলধারার নেতারা) আমাদের বিক্রি করতে উদ্যত হয়। আমরা জানি সেই কথা। আমরা এও জানি যে তারা এক ভয়ংকর প্রজাতির বহুরূপী। ভোটের আগে ও পরে তাদের ভিন্ন দুই রূপ। তারা কাশ্মীরে এক ভাষায় কথা বলে আর দিল্লীতে আরেক রকম। আমাদের কথা না ভেবে, তোমরাই তাদের লালন পালন করেছ, উন্নীত করেছ, শুধুমাত্র আত্মস্বার্থ রক্ষা করতে।
এবার তোমরা হয়ত হুরিয়াত নেতাদের দিকে আঙুল তুলবে। জানিয়ে রাখা ভালো যে আমরা তাদের বিষয়েও ওয়াকিবহল। আমরা জানি যে তাদের নেতৃত্ব কিছু বক্তৃতা, সমাবেশ আর প্রেস বিবৃতি অবধিই সীমাবদ্ধ। তাদের সংগ্রামের পরিকল্পনা ভরসাযোগ্য নয়। তোমাদের জানা দরকার যে আজ পরিস্থিতি এমনি যে মানুষ তাদের অনুসরণ করে না আর; বরং তারা অনুসরণ করতে বাধ্য হচ্ছে। তোমরা যদি রাজনৈতিক পরিসর উন্মুক্ত কর, তবে তারাও শান্তি প্রক্রিয়ার অংশীদার হয়ে উঠতে পারে।
এটুকু বলে শেষ করব যে আমরা তোমাদের বহুকাল ধরে সুযোগ দিয়েছি উত্তর খোঁজার। তৎসত্ত্বেও তোমরা আমাদের শুধুই নিরাশ করেছ আর এখন তাই দেখতে পাচ্ছো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া। পৃথিবীর ইতিহাসের শিক্ষা কি তোমরা ভুলে গেছো? মানুষের হাতেই থাকে আসল শক্তি। তারাই একদিন সমস্ত চূর্ণ বিচূর্ণ করে নতুন ভোর আনতে পারে। আমাদের তোমাদের প্রতি একটাই পরিষ্কার বার্তা- আমাদের গলার স্বরগুলোর কোন জটিল ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। শুধু কান পেতে মনুষ্যোচিতভাবে শুনলেই সবটা বোধগম্য হবে। পৃথিবীর সব মানুষের মত আমরাও মুক্তি, শান্তি, ও পূর্ণ মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার অধিকারের কামনা করি।

ধন্যবাদান্তে
ইমরান খান
এক কাশ্মীরি ছাত্র

সূত্রঃ https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=1809832482677226&id=1805610803099394


মরক্কোর ছাত্র রাজবন্দীদের অনশন ধর্মঘটকে সমর্থন করুন!

les-p.p.-de-Mekness


মরোক্কো: শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস দমন

instituteurs_stagiaires_2-c2a14

গত বৃহস্পতিবার কাসাব্লাংকা, ফেজে, ওজদা, আযদা এবং অন্যান্য শহরে প্রতিবাদ করার সময় শিক্ষক এবং ছাত্রদের হিংস্রভাবে দমন করে পুলিশ। শান্তিপূর্ণ এই সমাবেশের ওপর পুলিশ খুব নিষ্ঠুর ভাবে হস্তক্ষেপ করে, এতে কয়েক ডজন  বিক্ষোভকারী (কাসাব্লাংকাতে ৪০ ও মাররাকেছে ৩০) আহত হয়।


ফিলিপিনের মাওবাদী আর্মিতে যুবকদের যোগদান বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন সরকারী বাহিনী

1935491_1654414064827887_8666907650141027459_n

ফিলিপিনের সরকারের সম্মিলিত সামরিক বাহিনী (The Armed Forces of the Philippines-AFP/এএফপি), কর্ডিলেরা অঞ্চলে ফিলিপিনের কমিউনিস্ট পার্টির সশস্ত্র শাখা- নিউ পিপলস আর্মি(NPA)তে যুবকদের যোগদানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এই যুবকদের অধিকাংশই রাজধানী ম্যানিলা থেকে আসছে।

এদেরই একজন কমান্ডার কুরিন, এই নারী গেরিলা ফিলিপিনের একটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ছাত্রী, স্নাতক উত্তীর্ণ হবার পর তিনি ফরেন সার্ভিসে চাকরীর জন্যে আবেদন করেন। কিন্তু চাকরীতে ভাড়ায় কাজ করতে বললে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে, নিউ পিপলস আর্মিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আরেকজন নারী গেরিলা আছেন নাম- কারহা, তিনি ফূগাওয়ের কিউপিদিলিমানের সাবেক সাংবাদিক ও ছাত্রী । এমন আরো অনেক গেরিলা আছেন, যারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নেয়ার পর রাষ্ট্রীয় বৈষম্য ও শোষণের কারণে মাওবাদী NPA আর্মিতে যোগ দেন।

একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সরকার তরুণদের মধ্যে অসন্তোষের মাত্রা  বাড়িয়ে নিজেদের শত্রু তৈরি করছে।

কিন্তু The Armed Forces of the Philippines-AFP/এএফপি বলছে, কমিউনিস্ট দলে যুবকদের যোগদান করা থেকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তথ্যমূলক শিক্ষার শক্তিশালী কার্যক্রম চলতে থাকবে।

অনুবাদ সূত্রঃ

http://news.abs-cbn.com/video/nation/regions/v1/01/14/16/afp-alarmed-over-increasing-number-of-youth-joining-npa


ভারতঃ FTII: ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, হেফাজতে ৪০

pune-ftii-655x360

পুনে: এফটিআইআইয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই পদভার গ্রহণ করার কথা ছিল গজেন্দ্র চৌহানের৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রতিবাদ মিছিল চালাচ্ছিলেন ছাত্ররা৷ অভিযোগ, সেসময় হঠাৎই পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে এবং প্রায় ৪০ জন ছাত্রদের হেফাজতে নেয়৷

এফটিআইআইয়ের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত গজেন্দ্র চৌহান প্রায় সাতমাস বাদে তার দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ ভাবে একটি মিছিল করছিলেন৷ এই মিছিলে ১৭ জন ছাত্রকে উপস্থিত থাকার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল৷

প্রসঙ্গত, চেয়ারম্যান পদে গজেন্দ্র চৌহানকে নিযুক্ত করার পর থেকেই ছাত্রসহ সিনেমা জগতের বেশকিছু মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান৷ গজেন্দ্র চৌহানকে পদভার দেওয়াকে অনেকেই রাজনৈতিক ছক বলে অবিহিত করেন৷ কারণ গজেন্দ্র চৌহান বিজেপি সরকারের সদস্য৷ এই ঘটনায় প্রায় ১৩৯ দিন ধরে এফটিআইআইয়ে বিক্ষোভ চলে৷

উল্লেখ্য যে, ফিল্ম আন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান পদে সঙ্ঘ পরিবার অনুগত গজেন্দ্র চৌহানকে বসানোর মাধ্যমে হিন্দি সিনেমার হিন্দুত্বকরনের বৃত্ত সম্পূর্ন করার চেষ্টার প্রতিবাদে ফিল্ম আন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার অধ্যাপক ও ছাত্ররা গজেন্দ্র চৌহানসহ সমস্ত সঙ্ঘ পরিবার অনুগতদের নিয়োগ রুখতে এই আন্দোলন করে যাচ্ছেন।


ভারতঃ অপহৃত ছাত্ররা জানিয়েছে নকশাল ও গ্রামবাসীরা কোন দুর্ব্যবহার করেনি

pune-youth-759

ছত্তিশগড়ে গত মাসে নকশালদের দ্বারা অপহরণের পাঁচদিন পর মুক্তি প্রাপ্ত পুনের তিন ছাত্র গতকাল জানিয়েছে নকশালরা তাদের সাথে কোন প্রকার দুর্ব্যবহার করেনি। তারা গাদচিরোলিতে পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট সন্দীপ পাতিলের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নকশাল-অধ্যুষিত এলাকায় কঠোর জীবন সম্পর্কে জানতে এসে বন্দিদশার সময় তাদের অভিজ্ঞতা বলেন। অপহৃত ৩ ছাত্র- আদর্শ পাতিল, বিলাস ভালাকে ও শ্রীকৃষ্ণ শেওয়ালে-কে বিজাপুর জেলার বাসাগুদা গ্রাম থেকে গত ২৯শে ডিসেম্বর অপহরণ করে ২রা জানুয়ারি নকশালরা মুক্তি দেয়।

ছাত্ররা জানান, নকশালদের কাছে বন্দী থাকা অবস্থায় তাদের সাথে কোনরূপ দুর্ব্যবহার করা হয়নি। এই ছাত্ররা বিজাপুরে নকশাল অধ্যুষিত এলাকায় একটি পিস সাইকেল র‍্যালিতে যোগ দিয়েছিলেন। গত ২০শে ডিসেম্বর শুরু করা এই যাত্রায় পুনে থেকে ওডিশা পর্যন্ত ছিল তাদের এই র‍্যালি। ‘ভারত জোড়ো’ অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা। মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড় ও ওডিশায় শান্তির বার্তা দিতেই তাদের এই অভিযান ছিল।

ছাত্ররা বলেন, “আমরা আমাদের অভিযানের অংশ হিসাবে দূরবর্তী এবং মাওবাদী প্রভাবিত আদিবাসী অঞ্চলে মানুষের জীবন অধ্যয়ন করতে গিয়েছিলাম এবং আমরা সম্পূর্ণরূপে তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতাম। কিন্তু নকশালরা অপহরণ করবে, এটা আশা করিনি”।

“গত ২৯শে ডিসেম্বর আমরা ছত্তিসগড়ের বাসাগুদা গ্রামে বিরতি দেই, ওই সময় সাধারণ পোশাক পড়া কিছু লোক এসে আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে হাত বেঁধে ফেলে, তখনি আমরা বুঝতে পারলাম যে অপহৃত হয়েছি। যদিও গ্রামবাসী আমাদের খাবার দিয়েছিল।”

“পরের দিন নকশাল ইউনিফর্ম পড়া একজন লোক আমাদের কাছে এসেছিলেন এবং আমাদের সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন”। আমাদের মানিব্যাগে কিছু টাকা ছিল, কিন্তু নকশালরা ও গ্রামবাসীরা সেগুলো স্পর্শ করেনি। তারা আমাদের ব্যাগ, ক্যামেরা, মোবাইল ইত্যাদি চেক করেছিল। জানুয়ারির ২ তারিখে আমরা ছাড়া পাই।”

পুনের ছাত্ররা বলেন, “আমরা সম্পূর্ণরূপে একটি ভিন্ন পৃথিবী দেখেছি, যেখানে মানুষ এখনও বঞ্চনার মধ্যে বসবাস করছেন। তারা বিদ্যুৎ, পুষ্টিকর খাবার বা ভাল জামাকাপড় থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে “।

অনুবাদ সূত্রঃ http://www.business-standard.com/article/pti-stories/students-say-they-weren-t-ill-treated-by-naxals-in-captivity-116010501134_1.html