কলম্বিয়ার ভেনিজুয়েলা সীমান্তবর্তী এলাকায় সামরিক অভিযানে সাবেক গেরিলা গোষ্ঠী ফার্কের ১৬ ভিন্নমতাবলম্বী সদস্য নিহত হয়েছে। গত বুধবার দেশটির সেনাবাহিনী একথা জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস টুইটারে বলেন, আমরা এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে আমাদের নজরদারি কমাবো না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুইস কার্লোস বিলেগাস সাংবাদিকদের বলেন, এ অভিযানে বিদ্রোহী কমান্ডার অ্যালেক্স রেন্ডন নিহত হয়ে থাকতে পারেন।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, কলম্বিয়ার আরাউকা অঞ্চলের ফরটুল পৌর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। গ্রুপটি ওই এলাকার স্থানীয় একটি হাসপাতাল, তেল স্থাপনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
গ্রুপটি ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির বা ইএলএন স্থানীয় নেতাদের নিয়ে গঠিত। তারা আরাকুয়া, বোয়াকা ও কাসানার অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা চালায়।
কলম্বিয়া সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে মার্কসবাদী গেরিলা দল ‘ফার্ক’। তাদের সাথে করা শান্তিচুক্তির শর্ত বারবার লঙ্ঘন করায় সরকারকে অভিযুক্ত করে অস্ত্র পরিত্যাগ বিলম্ব করার হুমকি দিয়েছে ফার্ক।
গত নভেম্বরে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির শর্ত সরকার বারবার লঙ্ঘন করায় তারা এ হুমকি দিয়েছে। খবর এএফপি’র। এক বিবৃতিতে ফার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারের এই ধরণের দীর্ঘসূত্রিতা চলতে থাকলে তারা অস্ত্র পরিত্যাগের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে।
দলটির গেরিলা নেতা রদ্রিগো লন্ডনো এক টুইটার বার্তায় বলেন, সরকারের এমন আচরণের কারণে ফার্ক আন্তর্জাতিক মনিটরিংয়ের দাবি জানাতে যাচ্ছে। এর আগে তিনি গেরিলাদের অস্ত্র ত্যাগ স্থগিতের কথা বিবেচনা করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী কলম্বিয়ার ২৬টি অঞ্চলের ৭ হাজার বিদ্রোহীর জাতিসংঘের কাছে অস্ত্র সমর্পণের কথা রয়েছে।
কলম্বিয়ার মধ্য-ডানপন্থি সরকার ও মার্কসবাদী গেরিলা দল ‘ফার্ক’ এর মধ্যে চূড়ান্ত শান্তিচুক্তি সই হয়েছে।
সোমবারের এই চুক্তির মধ্যদিয়ে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের অবসান হল।
দীর্ঘ অর্ধ-শতকেরও বেশি সময় ধরে চলা এই লড়াইয়ে দুই লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
কিউবায় চারবছর ধরে শান্তি আলোচনা হওয়ার পর সোমবার প্রথমবারের মতো কলম্বিয়ার মাটিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস (৬৫) ও মার্কসবাদী ফার্ক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা টিমোচেনকো (৫৭) পরস্পরের সঙ্গে উষ্ণ করমর্দন করেন। এরপর সাদা একটি কলম দিয়ে তারা চুক্তিতে সই করেন।
ঐতিহাসিক এই চুক্তি অনুষ্ঠানে সমবেতরা “কলম্বিয়া দীর্ঘজীবী হোক, শান্তি দীর্ঘজীবী হোক” বলে স্লোগান দেন।
চুক্তি সই হওয়ার পর আবেগাপ্লুত সান্তোষ বলেন, “অর্ধশতক ধরে সহিংসতার কালরাত্রির যে ছায়া আমাদের ঢেকে রেখেছিল তার অবসান হয়েছে।”
কান্নাভেজা চোখে সান্তোস আরো বলেন, “একটি নতুন ভোরের প্রতি আমাদের হৃদয় মেলে ধরেছি, একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় সূর্য কলম্বিয়ার আকাশে উদয় হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অনেককে এ সময় কাঁদতে দেখা যায়। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে নিহত, পঙ্গু হয়ে যাওয়া, ধর্ষণের শিকার এবং বাস্তুচ্যুতদের স্মরণে অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
রোববার কলম্বিয়ার জনগণ এই নতুন চুক্তির অনুমোদনের ব্যাপারে ভোট দেবেন। জরিপ বলছে, সহজেই এটি পাস হবে।
চুক্তি অনুষ্ঠানে ফার্ক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা টিমোচেনকো বলেন, “আমরা অস্ত্রের পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বেছে নিয়েছি এ ব্যাপারে কারো কোনো সংশয় থাকা উচিৎ হবে না।”
এ সময় তিনি ফার্ক গেরিলাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, “আমরা সবাই আমাদের ভেতর থেকে, হৃদয় থেকে নিরস্ত্র হওয়ার জন্য প্রস্তুত।”
কলম্বিয়ার উপকূলীয় শহর কার্টাগেনায় হওয়া এই অনুষ্ঠানে আগতদের সবাইকে সাদা পোশাকে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। এতে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন, কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে হাভানায় সমঝোতার যৌথ ঘোষণা দিয়েছিল কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
সেখানে, বিস্তৃতভাবে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং স্থিতিশীল ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় উভয় পক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে একমত হয়।
কলম্বিয়া সরকার ও বামপন্থী গেরিলা বাহিনী রেভলিউশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক) মধ্যে অর্ধ শতক ধরে চলা এই সংঘাতে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে; ঘর-বাড়ি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
কিউবার রাজধানীতে হওয়া ওই অনুষ্ঠানে কলম্বিয়ার প্রতিনিধি দলের প্রধান উমবেরতো দে লা চাল্লে ও ফার্কের প্রধান আলোচক ইভান মার্কেজ চুক্তিতে সই করেছিলেন ।
কিন্তু এবার কলম্বিয়ার মাটিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতার মাঝে চূড়ান্ত চুক্তিতে সই হল।
চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে ফার্ক অস্ত্র সমর্পণ করে বেসামরিক জীবনে ফিরে যাবে।
গেল জুনে দুই পক্ষ দ্বিপক্ষীয় অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে সই করে, যা চুড়ান্ত সমঝোতার পথ তৈরি করে।
অবশেষে শান্তিচুক্তি করলো কলম্বিয়া সরকার ও মার্কসবাদী গেরিলা দল ফার্ক । প্রায় ৫০ বছর ধরে ফার্কের সঙ্গে কলম্বিয়ার সরকারের বিরোধ চলে আসছিলো।
কিছুদিনের মধ্যেই দুই পক্ষ কিউবার রাজধানী হাভানায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। যেখানে ২০১২ সাল থেকে ৪ বছর ধরে দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনা হয়ে আসছে।
গত জুনে কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক গেরিলারা দ্বিপাক্ষিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যার ফলশ্রুতিতে এ শান্তিচুক্তি হলো। গত ৫ দশক ধরে চলা এ যুদ্ধে অন্তত ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বাস্তুহারা হয়েছেন আরো লাখো লাখো মানুষ।
শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ফার্ক গেরিলারা তাদের অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করবে। চুক্তির পরপরই ফার্ক পক্ষের শান্তি আলোচক রদ্রিগো গানডা টুইট করেন, ‘যখন আলোচনা মাধ্যমে তুমি শান্তি পাবে, সেখানে কোনো জয় পরাজয় থাকে না। কলম্বিয়া জিতেছে, মৃত্যু পরাজিত হয়েছে।’
বুধবার ফার্ক গেরিলা নেতা টিমেলিয়েন জিমেনেজে সন্ধ্যা ৬টায় টুইট করে জানান দেন আলোচনার মাধ্যমে শান্তিচুক্তির দ্বারপ্রাপ্তে পৌঁছানোর কথা। দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসও দেশবাসীকে ঐতিহাসিক ও খুব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানানোর অঙ্গীকার করেন।
১৯৬৪ সাল থেকে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে বামপন্থি ফার্ক গেরিলারা। লাতিন আমেরিকায় ফার্ক-কলম্বিয়া সরকারের লড়াইই সবচেয়ে পুরনো গৃহযুদ্ধ।
জুলিয়ানাকে তার প্রেমিক অ্যালেক্সিসের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে৷ ১৬ বছর বয়সে জুলিয়ানের সৎ বাবা তাকে ধর্ষণ করলে সে পালিয়ে গিয়ে ফার্কে যোগ দেয়৷ এ মুহূর্তে ফার্কের সঙ্গে সরকারের যুদ্ধবিরতি চলছে৷ অচিরেই একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে৷ এমন শান্তিপূর্ণ পরিবেশের কারণে ফার্ক গেরিলাদের জঙ্গলের জীবন সম্পর্কে এ সব বিরল ছবি ও বিষয় জানা গেছে৷
প্রায় সাত হাজার ফার্ক গেরিলাদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী৷ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, সরকারি সেনাদের গতিবিধি শনাক্তকরণ – এ সব কাজ করে নারী গেরিলারা৷ তবে কিউবায় চলা শান্তি আলোচনা সফল হলে পরবর্তীতে কীভাবে জীবন কাটাবে সেই পরিকল্পনা করছে গেরিলারা৷ জুলিয়ানার ইচ্ছা রাজনীতিতে ঢোকা৷
ফার্ক নারী গেরিলারা অন্য মেয়েদের মতোই ঠোঁটে লিপস্টিক আর নখে নেইলপলিশ দেয়৷ কিন্তু তারা নাকি বেশ কঠোর! কলোম্বিয়ার এক সরকারি সেনা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-কে বলেন, ফার্কের হাতে ধরা পড়লে আপনাকে এই প্রার্থনা করতে হবে যেন পুরুষ গেরিলাদের হাতে ধরা পড়েন৷ কেননা নারী গেরিলারা বেশ কঠোর আচরণ করে৷
ইনার নাম ইরা কাস্ত্রো৷ ফার্কের মধ্যম পর্যায়ের এই কর্মী অন্য নারী গেরিলাদের কাছে মেন্টরের মতো৷ ছবিই বলে দিচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তার একটা বেশ সখ্যতা রয়েছে৷ কিউবায় তিন বছর ধরে চলা সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় তিনি অংশ নিচ্ছেন৷
ক্যাম্পের পরিবেশ – ছবিগুলো তোলা হয়েছে কলোম্বিয়ার গহীন জঙ্গলে অবস্থিত অ্যান্টিওকিয়া ক্যাম্প থেকে৷ ঐ জঙ্গলে বিষধর সাপ সহ রয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির উদ্ভট ধরনের ব্যাঙ৷ এখানে নারী এবং পুরুষ গেরিলারা কোন রকম সংকোচ ছাড়াই একসাথেই গোসল/স্নান করেন।
পিস্তলটি পরিষ্কারের পর বৃষ্টির পানি আর আর্দ্রতা থেকে বাঁচাতে কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রাখছে সিন্ডি৷ ১৮ বছর বয়সে ফার্কে যোগ দেয়া সিন্ডি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তার পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চায়৷ এরপর রাজনীতিতে যোগ দিতে চায়৷ আর চায় জনগণকে শিক্ষিত করে তুলতে৷
কলম্বিয়ার বামপন্থী ফার্ক গেরিলা দল ‘ফার্ক’ বলেছে, শান্তি চুক্তি সই হলে তারা দেশটির প্রকাশ্য রাজনীতিতে প্রবেশ করবে এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট গঠন করবে। বোগোটা সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে রাজি হওয়ার পর এ ঘোষণা দেন ফার্কের প্রধান রোডিগো লন্ডোনো। কলাম্বিয়ার স্থানীয় সাময়িকী সেমানা’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অস্ত্র তুলে রেখে প্রকাশ্য রাজনীতিতে ঢুকবে ফার্ক। চুক্তি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য দেশটির সর্বাধিক সংখ্যক দলকে একত্রিত করার বিষয়টি মৌলিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়াবে বলেও জানান তিনি।
লন্ডেনো আরো বলেন, চুক্তি সই হওয়ার পর অস্ত্র নামিয়ে রাজনৈতিক সংগ্রামে নামবে ফার্ক। এ ছাড়া, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠেয় কলাম্বিয়ার সংসদ এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও হয়ত অংশ গ্রহণ নেবে তার সংগঠন।
কিউবার রাজধানী হাভানায় কলম্বিয়া সরকার এবং ফার্ক প্রতিনিধি দল শান্তি আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ আলোচনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দু’পক্ষ।
১৯৬০-এর দশক থেকে ল্যাতিন আমেরিকার এ দেশটির বুর্জোয়া সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে আসছে মার্কসবাদী ফার্ক গেরিলারা।
এই পুঁজিবাদী বাস্তবতায় কলম্বিয়ার নারীরা অর্থনৈতিক, যৌন, মেধা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সব ধরণের নারী নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারী স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে এবং বাম থেকে আইনি রাজনীতি করতে যাওয়া নারীদের জন্য এটা প্রায়ই অসম্ভব। প্রতিদিন অনেক নারীরা কেন লাতিন আমেরিকার প্রাচীনতম গেরিলা দলে যোগ দিচ্ছেন? তারা নিজেদের মুক্তির জন্য সামাজিক ন্যায়বিচারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ একটি সমাজ নির্মাণের আদর্শে থেকে একটি সমাজতান্ত্রিক সমাজের জন্য সংগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেন। কলম্বিয়ার বুর্জোয়াদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া, এসব সত্য গোপন করে। এই সকল মিডিয়া কোম্পানিগুলো প্রচার করে থাকে যে, ফার্কের নারী গেরিলারা তাদের কমান্ডারদের যৌন দাসী হিসেবে ব্যবহৃত হন।
জনগণের কাছে বুর্জোয়া মিডিয়ার এই সব মিথ্যে প্রোপাগান্ডার বিপরীতে আসল সত্যতা তুলে ধরার জন্যেই ফার্কের বিপ্লবী নারীদের প্রকৃত জীবন নিয়ে এই তথ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছে।
কলম্বিয়ার মার্কসবাদী গেরিলা দল ফার্কের নেতা অস্ত্রশস্ত্র কেনা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিমোচেনকো নামে পরিচিত রডরিগো লন্ডোনো একহেভেরি সেপ্টেম্বরেই এই নির্দেশ দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত বন্ধে ফার্কের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন টিমোচেনকো। প্রায় তিন বছর ধরে কলম্বিয়া সরকারের সঙ্গে দেশটির বামপন্থি ফার্ক গেরিলা দলের শান্তি আলোচনা চলছে। উভয়পক্ষই জানিয়েছে, আসছে ২০১৬ এর মার্চে একটি শান্তিচুক্তিতে সই করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। রেভ্যুলশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া বা ফার্ক ১৯৬৪ সাল থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। তারপর থেকে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীর সংঘর্ষে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০১২ সালের নভেম্বরে কিউবা সরকারের উদ্যোগে দেশটির রাজধানী হাভানায় কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক নেতৃবৃন্দের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। শান্তি আলোচনার অন্যতম উদ্দেশ্য অস্ত্র ত্যাগ করে গেরিলা দলটির বৈধ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা। দীর্ঘদিনের আলোচনায় চারটি মূল বিষয়ে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
ফার্ক ও কলম্বিয়া সরকারের মধ্যে শান্তিচুক্তির আলোচনায় কলম্বিয়ার সরকার দেশটির বিভিন্ন কারাগারে রাজবন্দি থাকা মার্কসবাদী গেরিলা দল ‘রেভ্যুলুশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক’) প্রায় ৩০ জন গেরিলাকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে। কলম্বিয়া সরকারের এক বিবৃতির বরাতে বিবিসি বলছে, দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালানো গেরিলা এই দলটির সঙ্গে শান্তি আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক আস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ক্ষমা পেতে যাওয়া সম্ভাব্য ফার্ক গেরিলাদের কেউই গুরুতর কোনো অপরাধে দণ্ডিত নন বলেও বিবৃতি উল্লেখ করা হয়েছে।
কলম্বিয়ায় ফার্ক গেরিলাদের সশস্ত্র বিদ্রোহের অবসান এবং মূলধারার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে তিনবছর ধরে কিউবায় আলোচনা চলছে।
হাভানায় ফার্কের প্রতিনিধিরা স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে যেসব গেরিলা কারাবন্দি রয়েছেন তাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শান্তিচুক্তির আওতায়দণ্ডিত ফার্ক গেরিলাদের ক্ষমা ঘোষণা বিষয়ে কলম্বিয়ার সরকারের এই বিবৃতি ।
শান্তি আলোচনা চলার সময় ফার্ক গেরিলা দলও সরকারের মধ্যে আস্থা তৈরির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরমধ্যে ১৭ বছরের নিচে কোনো শিশুকে তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত না করা এবং যেসমস্ত এলাকায় মাইন পেতে রাখা হয়েছে সেসব এলাকা থেকে মাইন অপসারণে সহায়তা করা ইত্যাদি।
শান্তি আলোচনায় গতি আনার অনুরোধ জানিয়ে গেল সপ্তায় ফার্ক নেতা টিমোচেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস তার ভাইকে হাভানায় পাঠিয়েছেন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে কলম্বিয়া সরকার ও মার্কসবাদী ফার্ক গেরিলা দল ২০১৬ সালের ২৩ মার্চের মধ্যে একটি কার্যকর শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে অঙ্গীকার করে।
উল্লেখ্য যে, মার্কসবাদী ফার্ক গেরিলারা ল্যাটিন আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে বড় গেরিলা দল এবং ১৯৬৪ সাল থেকে তারা সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। দলটি ক্ষমতাসীন বুর্জোয়া, মার্কিন মদদপুষ্ট কলম্বিয়া সরকার, বহুজাতিক কোম্পানি ও নয়া উপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে গরীব মানুষদের অধিকার আদায়ের জন্যে সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
হাভানায় কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট সান্তোস (বায়ে), কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল (মাঝে) এবং মার্কসবাদী গেরিলা দল ফার্ক প্রধান টিমোচেনকো
কলম্বিয়ার বামপন্থী মার্কসবাদী গেরিলা দল ফার্কের নেতা অস্ত্রশস্ত্র কেনা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিমোচেনকো নামে পরিচিত রডরিগো লন্ডোনো একহেভেরি সেপ্টেম্বরেই এই নির্দেশ দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত বন্ধে ফার্কের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন টিমোচেনকো। প্রায় তিন বছর ধরে কলম্বিয়া সরকারের সঙ্গে দেশটির বামপন্থি ফার্ক গেরিলা দলের শান্তি আলোচনা চলছে। উভয়পক্ষই জানিয়েছে,আসছে মার্চে একটি শান্তিচুক্তিতে সই করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। ২০১২ সালের নভেম্বরে কিউবা সরকারের উদ্যোগে দেশটির রাজধানী হাভানায় কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক নেতৃবৃন্দের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়।
গত জুলাইয়ে গেরিলাদের পক্ষ থেকে কলম্বিয়া সরকারকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও তাদের ওপর স্থল অভিযান অব্যাহত রাখে দেশটির সেনাবাহিনী। যদিও ওই প্রস্তাবের পর বিমান হামলা বন্ধ রাখে দেশটির সরকার। দীর্ঘদিনের আলোচনায় চারটি মূল বিষয়ে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।