পেরুর মাওবাদী কমরেড গনজালো’র জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় আন্তর্জাতিক প্রচারণা চলছে
Posted: March 30, 2017 Filed under: ছবির সংবাদ, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: কমরেড গনজালো, মাওবাদী, maoist, shining path Leave a comment
সুইডেন –
মেক্সিকো –
কলম্বিয়া –
ব্রাজিল –
চিলি –
ইকুয়েডর –
পেরুর গণযুদ্ধের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও চিত্র
Posted: June 3, 2016 Filed under: অডিও-ভিডিও সংবাদ, গণযুদ্ধের সংবাদ, পেরু, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: শাইনিং পাথ, PCP, pcp-sl, shining path Leave a comment
পেরুর কমিউনিস্ট পার্টির নারী যোদ্ধাদের ভিডিও
Posted: May 19, 2016 Filed under: অডিও-ভিডিও সংবাদ, গণযুদ্ধের সংবাদ, নারী, পেরু | Tags: পেরুর গণযুদ্ধ, মাওবাদী, maoist, PCP, pcp-sl, shining path Leave a commentগৌরবান্বিত পেরুর গণযুদ্ধে্র ৩৬তম বার্ষিকী উদযাপন করুন!
পেরুর মহান মাওবাদী নেত্রী কমরেড ‘নোরা’
Posted: March 26, 2016 Filed under: নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: Augusta la Torre, কমরেড নোরা, মাওবাদী নারী, PCP, peru, shining path Leave a commentঅগাস্টা লা তোররে কারাস্কো ওরফে কমরেড নোরা(১৯৪৬-১৯৮৮) হচ্ছেন মাওবাদী পেরু কমিউনিস্ট পার্টি, যা Sendero Luminoso (শাইনিং পাথ) নামে পরিচিত, এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও নেত্রী ছিলেন। তার অন্য একটা পরিচিতি হল, তিনি পেরু কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান কমরেড এবিমেল গুজম্যান গণজালোর স্ত্রী ছিলেন। কমরেড নোরা তার কমিউনিস্ট বাবা এবং প্রগতিশীল দাদা’র রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। তবে তিনি কমরেড গণজালো’র মাধ্যমে মাওবাদী আন্দোলনের প্রতি প্রভাবিত হন।
১৯৬২ সালে ১৭ বছর বয়সে তিনি পেরু কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। তখন তিনি পেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক গণজালো’র সাথে পরিচিত হন। ওই সময় রাজনৈতিক কারণে তার বাড়ীতে কমরেড গণজালো’র নিয়মিত যাতায়ত ছিল। এক সময় মতাদর্শগত মিল থাকায় তারা পরস্পরকে বিয়ে করেন। ১৯৭৮ সালে তারা গোপন রাজনৈতিক জীবনে চলে যান। ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি কমরেড গণজালো’র সাথে পেরুর গণযুদ্ধের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পার্টি ও জনগণের সেবা করে যান।
তিনি ১৯৮০ সালে শুরু হওয়া পেরুর গণযুদ্ধের সময় গোপনে নারীদের সংগঠিত করে তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা অব্যাহত রাখেন। তিনি আলোচনা, লিখিত প্রচারণার মাধ্যমে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি করে বিপ্লবী আন্দোলনকে নারীদের অংশগ্রহণের জনপ্রিয় কেন্দ্রে পরিণত করেন। তিনি গেরিলা অ্যাকশনের সময় পার্টিতে নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত করেন।
পেরুর সংগ্রামী এলাকায় নতুন শক্তি ও নতুন নারীদের অবস্থান
Posted: March 7, 2016 Filed under: নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: নারী, পেরুর মাওবাদী নারী, মাওবাদী, maoist, PCP, peru, shining path Leave a comment
গ্রামাঞ্চলের মূল বিপ্লবী এলাকাগুলোতে(Base Area) গণযুদ্ধে নতুন জনশক্তি গড়ে উঠেছে। জনগন নতুন নতুন সংগঠন, নতুন রেজিমেন্টে এবং নতুন বিপ্লবী কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। নারীদের জীবনে এ কর্মসূচীর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলছে। নারী নির্যাতনের মূলভিত্তি উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, নারী নেতৃত্ব এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিটি বিষয়ে নারী ও পুরুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসছে। যার মধ্যে রয়েছে সামাজিক সম্পদ ও সম্পর্কের কথা।
গণকমিটি নির্বাচিত হচ্ছে। তাদের নেতৃত্ব সংগঠিত হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থা, নতুন সংস্কৃতি, বিচার ব্যবস্থা, জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক। গণ প্রতিনিধিগণ এক নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে পুরনো ঘুণে ধরা উৎপাদন ও বিনিময় সম্পর্ক উচ্ছেদ করে নতুন পদ্ধতি চালু করেছে। অতীতে বড় বড় সামন্ত প্রভু ও মাদক ব্যবসায়ীদের খবরদারীতে উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হত। এখন গণযুদ্ধের অনুকূলে যৌথ শ্রম ও আত্মনির্ভরশীলতার ভিত্তিতে নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সংঘটিত হচ্ছে। জমিদারদের জমি দখল করে ভূমিহীন ও গরীব চাষীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হচ্ছে। জমি শুধু পরিবার প্রধান পুরুষদের নামে দেয়া হয়নি, পরিবারের সকল সদস্যদের নামে বরাদ্দ করা হয়। সম্পত্তির উপর নারীদের সমান অধিকার ও নিয়ন্ত্রণ থাকে। প্রত্যেক পরিবারকে ভিন্ন ভিন্ন জমি বরাদ্দ করা হলেও চাষাবাদ ব্যবস্থা/পদ্ধতি পরিবার ভিত্তিক নয়। চাষের কাজ যৌথভাবে পরিচালিত হয়। যেখানে সার্বিক সমাজ কল্যাণে সকলকেই অংশগ্রহণ করতে হয়।
দাবী জানালে বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমুতি প্রদান করা হয়। নারী ও সন্তানেরা স্বামী কিংবা পিতার সম্পত্তি নয়। পিতা অথবা স্বামীর অনুমতি ছাড়াই নারীরা ইচ্ছা করলেই গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারে। গণকমিটিগুলো বেশ্যাবৃত্তি, মাদকশক্তি, স্ত্রী পেটানো বন্ধ করে দিয়েছে। বিধবা ও বয়স্করা সমাজের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে থাকে। শিক্ষা সুবিধা সকলের জন্য সহজলভ্য। সামন্ত ও পুঁজিবাদী প্রথায় জবরদস্তিমূলকভাবে কৃষকদের যে অবস্থায় বাস করতে বাধ্য করতে হতো- এসব ব্যবস্থা তার সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংগ্রামী এলাকাগুলোতে সর্বক্ষেত্রেই অভিনব রূপান্তর কার্যক্রমের পৃষ্ঠপোষকতা চলছে। এভাবেই গণযুদ্ধ সমগ্র জাতির রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের পথকে প্রস্তুত করে দিচ্ছে।
১৯৮২ সালে এল কোল্লাওতে এক নারী বন্দির সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে নারীদের ভুমিকার গুরুত্বকে তুলে ধরে। লিলিয়ান টয়েছ ছিলেন লিমার রাজপথের ফেরিওয়ালা। গণযুদ্ধে যোগদানের অপরাধে তাকে জেল বন্দি করা হয়। তিনি বলেন, প্রথম যখন ওরা আমাকে পার্টিতে যোগদানের প্রস্তাব আনে, তখন আমি কিছুটা আতংকিত হয়ে পড়ি। কিন্তু পরিশেষে আমি যখন বুঝতে পারলাম, আমি শুধু পেরুর জন্যে যুদ্ধ করছি না, যুদ্ধ করছি সারা বিশ্বকে শৃঙ্খল মুক্ত করার জন্যে, বিশ্ব বিপ্লবের জন্যে। তারপর আমি আতংক মুক্ত হলাম। অবশেষে বুঝলাম আমার বাঁচা-মরার কিছু উদ্দেশ্য আছে। তখন আমি বাজারে সবজির মত বেচাকেনা হতে অস্বীকার করলাম। এমনি ধারণায় সজ্জিত হয়ে অসংখ্য নারী যোদ্ধা বিপ্লবকে শক্তিশালী ও বিজয়মণ্ডিত করতে এগিয়ে আসছে।
সূত্রঃ [মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিপ্লবী পত্রিকা – রেভ্যুলেশনারী ওয়ার্কার, লন্ডন থেকে প্রকাশিত “বিশ্ব বিজয়”-(AWTW) এবং ব্রিটেনের টিভি Channel 4 কর্তৃক প্রচারিত পেরুর যুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা অবলম্বনে লিখিত।]
পেরুর বিপ্লবী সংগ্রামে মাওবাদী নারীদের আত্মত্যাগ
Posted: March 6, 2016 Filed under: নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: নারী, পেরুর মাওবাদী নারী, মাওবাদী, maoist, PCP, peru, shining path Leave a commentপ্রায় তিন যুগ ধরে পেরুতে সশস্ত্র সংগ্রাম চলছে । শুরু থেকেই এ মুক্তিযুদ্ধে বিপ্লবী যোদ্ধা ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে নারীদের প্রায় অর্ধ সংগঠন শক্তি রয়েছে। যুদ্ধ ক্ষেত্রে সরকারী বাহিনী অনেক নারীকে হত্যা করেছে। শাসক গোষ্ঠী বন্দি করেছে অনেক নারীকে। অসংখ্য নারীকে বন্দিশালায় হত্যা অত্যাচার-নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে- গুম করা হয়েছে। বিপ্লবী যুদ্ধে নজিরবিহীন আত্মবলিদানের জন্যে আজ ওরা স্মৃতিতে ভাস্বর ও সম্মানিত।
এদের মধ্যে বীর নারী শহীদ এডিথ লাগোস অন্যতম। ১৯৮২- এর দিকে এই নারী ছিলেন ১৯ বছরের নবীন গেরিলা যোদ্ধা। তিনি আয়াকুচো জেলখানায় গোপন গর্ত খননের কাজে একটি ছোট গেরিলা দলের নেতৃত্ব দেন। এই গেরিলা দল সকল বন্দি বিপ্লবীদের মুক্ত করে নিরাপদে ফিরে আসে। এই ঘাঁটি থেকে অনেক সরকারী অস্ত্রশস্ত্র দখল হয়। পরবর্তীতে এডিথ লাগোস পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। শাসক শ্রেণী তাদেরই সৃষ্ট আইনে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাঁকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে।
বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের জন্য এডিথ লাগোস আয়কুচোতে অনেক জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশের জন্য শেষকৃত্যানুষ্ঠানে জনতার ভীড়কে সরকার বেআইনি ঘোষণা করে। তবুও ৭০,০০০ জনপদ অধ্যুষিত আয়কুচোতে ৩০,০০০ লোক এডিথের বিদায়ের শোক মিছিলে যোগদান করে।
শুধু পেরুতেই নয়-এডিথ লাগোস বিশ্বব্যাপী বিপ্লবীদের আদর্শের প্রতীকে পরিণত হন। ’৯২ সালে জার্মানির তরুণ বিপ্লবীরা এডিথ লাগোস গ্রুপ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেন। বিভিন্ন দেশে বিপ্লবী কবিতা গানে এডিথ লাগোসের বীরত্বের কথা ছড়িয়ে পড়েছে।
আর এক মহান বিপ্লবী নারী যোদ্ধা হচ্ছেন লোরা জ্যাম্বানো পাছিলা নামে একজন স্কুল শিক্ষিকা। যিনি মিচি নামেই সর্বাধিক পরিচিত। ১৯৮৪ সালে তাঁকে বন্দি করে ১০ বছর সাজা দেয়া হয়। শাসক গোষ্ঠী মিচি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে রাজধানী লিমা অঞ্চলে পার্টি সংগঠনে রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখার জন্য। ১৯৮১ সালের মার্চে জারীকৃত তথাকথিত সন্ত্রাস বিরোধী ৪৬ ধারা অনুসারে তাকে দোষী বলে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রেসিডেন্ট এই অধ্যাদেশ বলে পেরু কমিউনিস্ট পার্টি(পিসিপি)কে বেআইনি ঘোষণা করে। তারা সন্ত্রাস শব্দটির একটি আইনগত সংজ্ঞা প্রদান করে- যার অর্থ হলো পিসিপি চালিত সশস্ত্র সংগ্রামের পক্ষে যে কোন মন্তব্যই সন্ত্রাসের আওতাধীন।
লন্ডন থেকে প্রকাশিত “বিশ্ব বিজয়” (A world to win)- AWTW পত্রিকায় ১৯৮৫ সালে মিচির একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল। সে বিবৃতিতে মিচি বিশ্ববাসীকে বলেছিলেন- “যে পুরনো ঘুণে ধরা শোষণনীতি, অত্যাচারী আইন ও বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে তা এই রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার প্রতিবিপ্লবী বৈশিষ্টকেই তুলে ধরেছে। এমনকি এই আইনি ব্যবস্থার অন্ধ ও অমানবিক খুঁটিনাটি দিকগুলোকেও নগ্নভাবে প্রকাশ করে দিয়েছে। কিন্তু আইনের নামে এই কসাইখানার শাস্তি ও শোষণ নীতি বিপ্লবীদের দমন করতে পারেনি। ওরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এবং বিপ্লবী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সকল কালাকানুন প্রত্যাখ্যান করেছে।
২০ জুলাই দু’জন নারী পুলিশ আমাকে আটক করে। ২৩ জুলাই পর্যন্ত আমি সিভিল গার্ডের নিয়ন্ত্রনে থাকি। সে কয়দিন প্রতিক্রিয়াশীল চক্র আমাকে সকল ধরণের নির্যাতন চালায়। ওরা আমার সকল মনোবল চুরমার করে দিতে চেষ্টা করে। মিথ্যা স্বীকারোক্তির জন্যে আমার উপর অত্যাচার চালায়। সবচেয়ে জঘন্য ও বিকৃত নির্যাতনের মাধ্যমে আমার বিপ্লবী নৈতিকতাকে দুর্বল করার চেষ্টা করে। সেখান থেকে আমাকে সন্ত্রাস দমনকারী পুলিশ বাহিনীর কাছে পাঠানো হয়। যেখানে ৪ আগস্ট শনিবার পর্যন্ত আমাকে তাদের মাটির নীচে কারাকক্ষে থাকতে হয়। আমাকে তিন ধরণের নির্যাতন সহ্য করতে হয়।
(১) মানসিক নির্যাতন- যাতে ছিল নিদ্রাহীন ও বিশ্রামহীন অবস্থায় একনাগাড়ে ৪ দিন দাঁড়িয়ে থাকা, সর্বক্ষণ প্রহরীর দৃষ্টি আতঙ্কিত ও নির্যাতিত অবস্থায়।
(২) এভাবে তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হলে, আমার দেহের বিভিন্ন অংশে পিটাতে শুরু করে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি, ফুসফুস ও মস্তিষ্কে।
(৩) তারপর পিঠ মুড়ে হাত বেঁধে আমাকে শিকল দিয়ে শূন্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আর আমার সর্ব অঙ্গে চলতে থাকে প্রহার। তারপর এসিড কিংবা পায়খানার মলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। কারণ ওরা আমাকে শারীরিকভাবে ধ্বংস করে দিতে চেষ্টা করে।
রক্তপাত ঘটিয়ে প্রতিক্রিয়াশীলচক্র বিপ্লবকে ধ্বংস করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু যতই রক্তপাত ঘটছে বিপ্লব ততই তীব্র হচ্ছে। ঝরে যাওয়া রক্তে বিপ্লব তলিয়ে যায় না বরং ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিক্রিয়াশীল হায়েনার দল জনগণের লাশ খাওয়ায় স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু সশস্ত্র সংগ্রামের লেলিহান শিখা তাদের পুড়িয়ে ছাই ভস্মে পরিণত করবে। আমাদের লক্ষ্য পৃথিবীকে পরিবর্তন করা। নতুন বিশ্ব পুরনো পৃথিবীকে পরাজিত করবেই।”
সূত্রঃ [মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিপ্লবী পত্রিকা – রেভ্যুলেশনারী ওয়ার্কার, লন্ডন থেকে প্রকাশিত “বিশ্ব বিজয়”-(AWTW) এবং ব্রিটেনের টিভি Channel 4 কর্তৃক প্রচারিত পেরুর যুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা অবলম্বনে লিখিত।]
পেরুর গ্রামে-গঞ্জে মাওবাদী নারী গেরিলা যোদ্ধারা
Posted: March 5, 2016 Filed under: নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: নারী, পেরুর মাওবাদী নারী, মাওবাদী, maoist, peru, shining path Leave a commentকোন কোন “গণ গেরিলা বাহিনী” অধিকাংশই নারী নিয়ে গঠিত। যেখানে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সামরিক নির্দেশনায় নারীরাই প্রাধান্য। যে দেশে সামন্ত প্রভু ও তাদের জুলুমবাজ গুন্ডাবাহিনী মাঝে মাঝেই কৃষাণ নারীদের উপর বলাৎকার করে। সেই কিষান নারীদের বিপ্লবী উত্থানে নারী দলনকারী সামন্ত প্রথা এখন এক বজ্র কঠিন হুমকির সম্মুখীন।
পেরুর গ্রাম এলাকায় চলছে বিপ্লবীদের সম্মেলন প্রস্তুতি। সাম্যবাদী কাস্তে হাতুড়ী খচিত লাল পতাকা আর ফেস্টুন উচানো হাতে নারীরা চলছে জোর কদমে। একজন নারীর নেতৃত্বে গ্রামে-গঞ্জে ফিরছে বিপ্লবী শ্লোগানে মুখরিত জনতা- “পেরুর কমিউনিস্ট পার্টি-পিসিপি জিন্দাবাদ!” “পেরুর গণ গেরিলা” বাহিনী জিন্দাবাদ!”
এক তরুণী, মাথায় সাহেবী টুপি, পরনে স্বচ্ছন্দে চলার মতো নীল জিন্স, সংগ্রামী সাথীদের নিয়ে বসা অবস্থায় ক্রোড়ে তার আবদ্ধ বন্দুক। তার বলিষ্ঠ কণ্ঠে উচ্চারিত- “গণ গেরিলা বাহিনীর একজন যোদ্ধা হিসেবে আমি গর্বিত। আমার দল ও বিপ্লবের জন্যে আমি জীবন দিতে প্রস্তুত। আর সারা দেশব্যাপী যে ক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি তা রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
আয়াকুচোতে চলছে আর এক সম্মেলনের প্রস্তুতি। এখানে গণযুদ্ধ শক্তি অর্জন করে চলেছে। এক বিশেষ বিজয় উদযাপনের জন্যে কৃষকরা একত্রিত হয়েছে। বন্দুক সজ্জিত এক তরুণী জনতার ভীড় ঠেলে সামনে বেরিয়ে আসে। তার টুপির অগ্রভাগে এক ফুল। পিঠে বাঁধা ওর কম্বল ও খাদ্য সামগ্রী। মুখে তার অনিশ্চয়তার অভিব্যক্তি; ক্রমান্বয়ে সে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোকপাতের উদ্দেশ্যে সে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে বলতে থাকে –
“আজ আমরা জনগণের প্রকাশ্য গণকমিটির(Open Peoples Committee) ঘোষণা দিচ্ছি। চেয়ারম্যান গনজালো বর্তমান শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মানবের দীপ্ত আলোকে নির্দেশনায় আমরা চালিত। চেয়ারম্যান গনজালো’র বিষয়ে কি আপনাদের জানা আছে? পেরুর বীরোচিত সংগ্রামের তিনি অগ্রনায়ক। তিনি শিক্ষকদের শিক্ষক, তিনি মহীয়ানদের মহত্তম, আমাদের সেনপতি। বিজয় মণ্ডিত বিপ্লবের বিগত বছরগুলোর কথা স্মরণ করুন। দেখুন কি করে তিনি সাম্যবাদী চিন্তাধারাকে আত্মস্থ করেছেন। যে কোন ঝড়-ঝঞ্জা, বাঁধা-বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে যেতে তিনি লৌহ দৃঢ় উপাখ্যানের সৃষ্টি করেছেন। এক একটি সাফল্য অর্জনে বিপ্লব সংগঠিত করতে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত!
আমাদের কি আছে? কিছুই না। কি আমাদের অভাব? সবকিছুরই। ধনী সমাজ বর্জিত এক নতুন সমাজ আমাদের কাম্য।
পরিপূর্ণ একই সূত্রে বাঁধা এক সমাজ। চেয়ারম্যান গনজালোই দিতে পারেন যার নিরাপত্তা। আমরা মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ রক্ষা ও প্রয়োগের মাধ্যমে উজ্জ্বল চলার পথ সৃষ্টি করবো, চেয়ারম্যান গনজালোকে অনুসরণ করবো।”
সূত্রঃ [মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিপ্লবী পত্রিকা – রেভ্যুলেশনারী ওয়ার্কার, লন্ডন থেকে প্রকাশিত “বিশ্ব বিজয়”-(AWTW) এবং ব্রিটেনের টিভি Channel 4 কর্তৃক প্রচারিত পেরুর যুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা অবলম্বনে লিখিত।]
বীরত্বের দিনে আত্মবলিদানকারী পেরুর মাওবাদী নারী গেরিলারা
Posted: March 4, 2016 Filed under: নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: নারী, পেরুর মাওবাদী নারী, মাওবাদী, maoist, peru, shining path Leave a comment১৯৮৬ এর ১৯ জুন ছিল এক বীরত্বের ও সাহসিকতার দিন। এই দিনে পেরুর বিপ্লবী জেল বন্দীদের এক সাহসী উত্থান, সরকার চালিত বর্বরোচিত ধ্বংসযজ্ঞের সম্মুখীন হয়। লিমার নিকটবর্তী তিনটি জেল খানায় যুদ্ধ বন্দিরা সরকারী এক গণহত্যার ষড়যন্ত্রকে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে এ অভ্যুত্থান ঘটায়। ওরা প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্রসহ প্রহরী ও জেলখানাগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় এবং দাবী জানায় সরকার যেন বন্দিদের জীবনের নিরাপত্তা চুক্তিটি ভঙ্গ না করে। গণযুদ্ধকে আরও গতিশীল করার জন্য ওরা দৃঢ় সংকল্প ঘোষণা করে।
ফ্রন্টন দ্বীপের এক জেলখানায় মেয়েরা বন্দিরা প্রধানতঃ দেশী অস্ত্রশস্ত্র-ক্ষেপণাস্ত্র, তীর ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সরকারী নৌ ও হেলিকপ্টারের ভয়ানক গোলাগুলির আক্রমণকে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখে। কেল্লাওর মেয়েদের জেলখানায় ৭৫ জন বন্দীর মধ্যে ২জনকে হত্যা ও ৬ জনকে প্রচণ্ড প্রহার করা হয়। পেরুর কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও সমর্থক হওয়ার অপরাধে লুরিগাঙ্কো জেলখানায় ১৩৫জন বন্দির সকলকে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে প্রায় ১০০জনকে সরকারী ফ্যাসিস্ট বাহিনী বন্দি করে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করে। ফ্রন্টনে কমপক্ষে ১১৫জন বিপ্লবীকে হত্যা করা হয়।
এক বছর পরে ১৯৮৭ সালের জুলাই মাসে পেরুর কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান চেয়ারম্যান গনজালো নিম্নলিখিত বক্তব্য দিয়ে এ বীরত্বের দিনটিকে অবিস্মরণীয় করে রেখেছেন, “ওরা কখনো মাথা নত করেনি। ওরা অসীম বীরত্বের সাথে সর্বশক্তি দিয়ে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যায়। আর তাদের জীবন-পণ যুদ্ধ পেরুর পুরনো ঘুণে ধরা সমাজকে যুদ্ধের উজ্জ্বল কেন্দ্রে পরিণত করে। সমাধির অন্তরাল থেকে ওরা বিজয় অর্জন করে চলেছে। কারণ ওরা প্রাণ চঞ্চল আমাদেরই মত নব নব বিজয়ে মণ্ডিত। ওদের সতেজ ও স্থায়ী অস্তিত্বে বিষয়টি কল্পনা করুন; ওরা জ্বলছে। বর্তমান-ভবিষ্যৎ ও চিরকালের জন্যে এই শহীদ বিপ্লবীরা আমাদের কাছে শিক্ষার আলোক বর্তিকা হয়ে থাকবে। আমরা যেন ওদের মতই পার্টি-বিপ্লব-জনগণের জন্যই জীবন উৎসর্গ করতে পারি।”
পেরুর চলমান সংগ্রামে বন্দি বিপ্লবী নারীরা এক বীরত্বগাঁথা ভুমিকা পালন করে চলেছে। বিপ্লবের সাথে একাত্ব এই নারীদের উপর শাসকগোষ্ঠী চালাচ্ছে কঠোর নির্যাতন। একদিনেই ওরা ৬০০জন নারীকে ঘেরাও করে জেলে নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু সরকার নারী যোদ্ধাদের বিপ্লবী চেতনার অবসান ঘটাতে পারেনি। জেল বন্দি নারীরা কোন মতেই আত্মসমর্পণ করেনি। বরং ওরা বিপ্লবী চেতনা ও সঙ্কল্পে আরও বলীয়ান হয়েছে। জেল অভ্যন্তরে ফ্যাসিস্টদের হিংস্র নির্যাতনকে উপেক্ষা করে ভবিষ্যৎ সংগ্রামের লক্ষ্যে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। কারাগার পরিণত হয়েছে বিপ্লবীদের বিশ্রামাগার ও শিক্ষাকেন্দ্র।
সাথী পুরুষ যোদ্ধাদের মত হাজার হাজার জেল বন্দি নারীরা জেলখানাগুলোকে বস্তুবাদী শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত করেছে। শাসকদের নির্যাতনে ওরা পরাজিত-অধঃপতিত কিংবা ভেঙ্গে পড়েনি। বরং আরো হয়ে উঠেছে বিপ্লব নিবেদিতা, চালিয়ে যাচ্ছে পড়াশুনা, আঁকড়ে ধরছে সঠিক বিপ্লবী পথ। এভাবে বন্দি নারী বিপ্লবীরা পেরু ও সারা বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মুক্তি সংগ্রামে সহায়তা করছে। ভয়ংকর মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক সাম্যবাদী বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে ওরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্রঃ [মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিপ্লবী পত্রিকা – রেভ্যুলেশনারী ওয়ার্কার, লন্ডন থেকে প্রকাশিত “বিশ্ব বিজয়”-(AWTW) এবং ব্রিটেনের টিভি Channel 4 কর্তৃক প্রচারিত পেরুর যুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা অবলম্বনে লিখিত।]
পেরুর গণযুদ্ধে শহীদ নারী কমরেড ‘এডিথ লেগোস সায়েয’
Posted: February 16, 2016 Filed under: নারী, লাল সংবাদ/lal shongbad, শহীদ জীবনী | Tags: মাওবাদী, edith lagos, shining path Leave a commentকমরেড এডিথ লেগোস সায়েয, পেরুর কমিউনিস্ট পার্টি- শাইনিং পাথ এর একজন সদস্য ছিলেন। তরুণী এই মাওবাদী কমান্ডারকে পেরুর নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করে। এ সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। তিনি জেল কারাগারে বন্দী শত শত কমরেডদের মুক্ত করতে সফল সাহসী আক্রমণের নেতৃত্বে দিয়েছিলেন। তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে শহরের ৭০ হাজার জনগণের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার জনগণ উপস্থিত ছিলেন। প্যারামিলিটারী গ্রুপ রডরিগো ফ্রাঙ্কো কমান্ড পরে তার সমাধিতেও বোমাবর্ষণ করে। তিনি একজন ত্যাগী, নিষ্ঠাবান্, সৎ বামপন্থী বিপ্লবী ছিলেন। তিনি আজও পেরুর হাজার হাজার মাওবাদী গেরিলার প্রেরণার উৎস-
জন্ম – ২৭ই নভেম্বর ১৯৬২
শহীদ– ২রা সেপ্টেম্বর ১৯৮২