ফ্যাসিস্ট তুর্কি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সাঁড়াশি আক্রমণ, খতম ৩ সেনা, আহত বেশকিছু

12ler_alibogazi_1

গত ১লা জুন তুরস্কের কৃষক ও শ্রমিকদের কমিউনিস্ট গেরিলা সেনাবাহিনী(TIKKO) ফ্যাসিবাদী তুর্কি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দুটি হামলা চালায়। এতে তিন জন শত্রু সৈন্যকে খতম করা হয় এবং আনুমানিক অনেক সৈন্যকে আহত করা হয়, যার সংখ্যা স্পষ্ট করা যায় নি। আলিবাগাজী ও বোজান এলাকায় এই হামলা হয়।

এই হামলাটি, গত ২৪ এবং ২৮শে নভেম্বর, ২০১৬ এর মধ্যে দারসিম অঞ্চলে ফ্যাসিস্ট তুরস্ক সেনাবাহিনী কর্তৃক হত্যাকৃত TKP / ML-TIKKO এর ১২ জন শহীদ গেরিলার প্রতি উতসর্গ করা হয়েছে।

 তুরস্কের কৃষক ও শ্রমিকদের কমিউনিস্ট গেরিলা সেনাবাহিনী(TIKKO) হচ্ছে তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টি TKP / ML এর সশস্ত্র শাখা।

সূত্রঃ http://kaypakkayahaber.com/haber/tkpml-tikko-dersim-bolge-komutanligindan-1


তুরস্কঃ (ভিডিও) শহীদ মাওবাদী TIKKO গেরিলাদের প্রতি সম্মান জানাতে রোজাভায় অনুষ্ঠান

শহীদ মাওবাদী TIKKO গেরিলাদের প্রতি সম্মান জানাতে রোজাভায় রাকা ফ্রন্টের কেন্দ্রস্থলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক মুক্তি ব্যাটেলিয়ন। দারসিম পর্বতাঞ্চলে তুরস্কের ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের হামলায় কর্তৃক এই সব মাওবাদী TIKKO গেরিলারা শহীদ হন।

tkpmltikko

সূত্রঃ http://www.redspark.nu/en/peoples-war/turkey/video-ceremony-in-rojava-to-honor-the-memory-of-martyred-tikko-guerillas/


ইস্তাম্বুলে মাওবাদীদের সশস্ত্র পদক্ষেপের সংবাদ

4

গত ১৪ই নভেম্বর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের এসেন্যুরত জেলার কিরকুকে মাওবাদী TIKKO (তুরস্কের শ্রমিক ও কৃষকদের মুক্তি সেনা)  একটি সশস্ত্র অভিযান চালায়।

২০০৪ সালের ৯ই নভেম্বরে দারসিমে শহীদ কমরেড Aşkın Günel এবং Cafer Kara এর স্মরণে এই সশস্ত্র অ্যাকশন চালানো হয়। এসময় জেলা পুলিশের সদর দপ্তরে ভারী অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়।

এই সশস্ত্র অবস্থান থেকে TIKKO পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় যে, তারা “শান্ত থাকবে না এবং নিপীড়িত কুর্দি জনগণের ওপর ফ্যাসিস্ট আক্রমণকারীদের বিশ্রাম নিতে দেবে না”।

ইতিমধ্যে গত ২৯শে অক্টোবর মাওবাদীরা পেন্দিক জেলার আয়দোসেও একটি সশস্ত্র পদক্ষেপ চালায়।

এসময় পেট্রোল বোমা এবং ভারী অস্ত্র দ্বারা সুরক্ষিত একটি সশস্ত্র বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালের ২২শে অক্টোবরে শহীদ কমরেডদের স্মরণে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশটি “টিকেপি / এমএল (তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টি / মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) কর্তৃক সংগঠিত এবং প্রসারিত গণযুদ্ধ” এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়।

উল্লেখ্য যে,  TIKKO  হচ্ছে  তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টি / মার্কসবাদী-লেনিনবাদী এর সামরিক শাখা।

3

2

1

সূত্রঃ http://www.demvolkedienen.org/index.php/de/asien/1110-bewaffnete-aktionen-in-istanbul


তুরস্কের মাওবাদীরা ক্ষমতাসীন AKP সরকারের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে

1

এরদোগানের ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র এবং তার দল AKP-র বিরুদ্ধে তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টি(মাওবাদী)’র সশস্ত্র শাখা TIKKO এর চলমান যুদ্ধের অংশ হিসেবে মাওবাদীরা গত ১০ই ফেব্রুয়ারি রাত ১২.৩০ মিনিটে ইস্তাম্বুলে AKP পার্টির অফিস ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে। কুর্দি জনগণের উপর তুর্কি সরকারের চলমান গনহত্যা, বিশেষ করে সিজরে তুর্কি পুলিশ কর্তৃক ৬০ জন কুর্দি জনগণকে হত্যার প্রতিবাদে এই অগ্নিসংযোগের হামলাটি চালানো হয়েছে। এদিকে গত কিছুদিন ধরেই ইস্তাম্বুলের রাস্তায় পুলিশের সাথে মাওবাদীদের সংঘর্ষ চলছে।

2

হামলার উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মাওবাদীরা স্প্যানিশ ভাষায় বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে মাওবাদীরা বলেন, “আমরা কুর্দি জনগণকে লক্ষ্যবস্তু করে চালানো সকল হামলার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলব, আমরা এই বিষয় নিয়ে নীরব থাকব না। কায়পাক্কায়া’র উত্তরাধিকারী হিসেবে, আমরা কুর্দি জনগণের ওপর হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জোরদার করব এবং ফ্যাসিস্ট AKP শক্তির প্রতিনিধিত্বমূলক সব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে থাকবে!”।

3

উল্লেখ্য যে, তুরস্কের দমনবাদী ফ্যাসিস্ট সরকারী বাহিনী পেন্দিক জেলায় প্রবেশ করে জনগনের উপর নির্যাতন চালায় এবং অনেককেই তাদের হেফাজতে নিয়েছে। এসময় সরকারী কয়েক ডজন সাঁজোয়া গাড়ি ও  বিশেষ বাহিনীর শত শত সদস্য এলাকায় একযোগে হামলা চালায় এবং প্রকাশ্য স্থানে তল্লাশি চালিয়ে জনগণকে জেরা এবং ভয় দেখাতে চেষ্টা করে।

অনুবাদ সূত্রঃ http://www.ozgurgelecek.org/manset-haberler/18958-tkko-militanlar-kuerdistan-icin-akp-binasn-atee-verdi.html


TIKKO কারা ? তুরস্কের গণযুদ্ধ


২০১১ সালে তুরস্কের দারসিমে শহীদ ৫ মাওবাদী নারী গেরিলা

 

tkp-ml-tikko

তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টির(TKP/ML) সামরিক শাখা(TIKKO)’র দারশিম অঞ্চলের ৫জন মাওবাদী নারী গেরিলা কমরেড ২রা ফেব্রুয়ারি ২০১১ সালে ভোর ৫ টায় শীতকালীন ক্যাম্পে তুষার ধ্বসে শহীদ হন। তুরস্কের গণযুদ্ধের অংশ এই সব শহীদ নারী কমরেডদের স্মরণে তাদের পার্টি পরিচিতি দেয়া হল –

10269272_703277903065595_3264533733652719853_o

শেফাগূল কেশজীনঃ কোড নাম, এয়লেম; ১৯৭৭ সালে এরজূরুমে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে তিনি গেরিলা সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন দারশিম অঞ্চলের রাজনৈতিক( পলিটিকাল লেফটেন্যান্ট) কর্মী।

কমরেড শেফাগূল কেশজীন

কমরেড শেফাগূল কেশজীনঃ কোড নাম, এয়লেম; ১৯৭৭ সালে এরজূরুমে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে তিনি গেরিলা সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন দারশিম অঞ্চলের রাজনৈতিক (পলিটিকাল লেফটেন্যান্ট) কর্মী।

 

কমরেড নূরশেন আসলান

কমরেড নূরশেন আসলান

কমরেড নূরশেন আসলানঃ কোড নাম, এমেল; ১৯৮১ সালে টোকাতে(কৃষ্ণ সাগর) জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৯ সালে গেরিলা সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন TKP/ML এর অগ্রগামী সহানুভূতিশীল। একই সাথে দারশিম অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। 

কমরেড গুলজার ওযকান

কমরেড গুলজার ওযকান

কমরেড গুলজার ওযকানঃ কোড নাম, ওযলেম; ১৯৬৭ সালে দারশিমে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৫ সালে গেরিলা সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন TKP/ML এর অগ্রগামী সহানুভূতিশীল। একই সাথে TIKKO  কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। 

 

কমরেড ফাতেমা একার

কমরেড ফাতেমা একার

কমরেড ফাতেমা একারঃ কোড নাম, দিলেক; ১৯৮৩ সালে মারশিনে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে গেরিলা সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন TKP/ML এর অগ্রগামী সহানুভূতিশীল। একই সাথে TIKKO  কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। 

 

কমরেড দেরিয়া এরাস

কমরেড দেরিয়া এরাস

কমরেড দেরিয়া এরাসঃ কোড নাম, শেভদা; ১৯৭৯ সালে এরজিনকানে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৯ সালে গেরিলা সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন TKP/ML এর অগ্রগামী সহানুভূতিশীল এবং TIKKO যোদ্ধা ছিলেন। 

সূত্রঃ https://revolutionaryfrontlines.wordpress.com/2011/04/26/turkey-five-tkpml-tikko-women-guerillas-killed-in-avalanche/

 


তুরস্কঃ বামপন্থীদের হত্যার প্রতিবাদে আইএসকে সহায়তাকারী ২ তুর্কি পুলিশকে খতম করল কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (PKK- পিকেকে)

২ পুলিশের লাশ উদ্ধারের পরে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা

২ পুলিশের লাশ উদ্ধারের পরে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা

সিরিয়া সীমান্তের কাছে তুরস্কের দুই পুলিশকে খতম করা হয়েছে। তুরস্ক সরকারের সহায়তায় আই এসের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩১জন বামপন্থীদের হত্যার ও শতাধিক আহতের প্রতিবাদে খতমের এ ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করেছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে।

এর আগে, তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় সানলিউরফা প্রদেশের একটি শহর থেকে দুই পুলিশের মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাদেশিক গভর্নর ইজ্জেদিন কুচাক জানান, নিহত দুই পুলিশের মাথায় গানশটের গুলির চিহ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, দুই পুলিশ নিহতের ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।

নিহত দু জনের একজন ছিলেন তুরস্কের সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ বিভাগের সদস্য; অন্যজন দাঙ্গা পুলিশ হিসেবে কাজ করছিলেন।

তুরস্কের সানলিরউফা প্রদেশের সুরাক শহরে, কোবানিতে আটকে থাকা বেসামরিক লোকজনের জন্য ত্রাণ সহযোগিতা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া বামপন্থীদের প্রায় ৩শ’ তরুণ একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে ‘আমারা সংস্কৃতি কেন্দ্রে‘ সোস্যালিস্ট ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন ফেডারেশনের সমাবেশে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৩২ জন নিহত ও প্রায় ১০০ মানুষ আহত হওয়ার দু দিন পর পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটলো। উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএআইএল ওই সমাবেশে হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে।

এদিকে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স(HPG) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই দুই পুলিশ অফিসার আইএস জঙ্গিদের সহায়তা করছিল। আজ ভোর ৬টায় তাদের খতম করা হয়েছে।

তুরস্কের মাওবাদী ও বামপন্থী কুর্দিরা অভিযোগ করে আসছিল যে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সরকার আইএস জঙ্গিদের মদদ দিচ্ছে এবং উক্ত সমাবেশে হামলার ঘটনার সাথে তুরস্ক সরকার জড়িত। মাওবাদীরা ওই হামলার পর থেকেই তুরস্ক রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীর উপর হামলা শুরু করেছে, এরই ধারাবাহিকতায় পিকেকে ২ পুলিশকে খতম করে।

সূত্রঃ http://www.telegraph.co.uk/news/worldnews/europe/turkey/11755018/Two-Turkish-police-officers-killed-close-to-Syria-border.html


রোজাভায় গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিকতাবাদী মুক্ত ব্রিগেড

R1

R2

R3

 

রোজাভা ও মধ্য পূর্বাঞ্চলীয় জনগণের শক্তিমত্তাকে বিবেচনায় রেখে রোজাভায় মুক্ত ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে।

এই ব্রিগেডটি আইএসআইএস ও সমগোত্রীয় দখলদারী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালাবে।

জানুয়ারী থেকে এমএলকেপি (MLKP) ব্রিগেড স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

ব্রিগেডের যোদ্ধাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিভিন্ন সংগঠন যেমন, Reconstruction (Spain), TIKKO, United Freedom Forces (BÖG), MLSPB Revolution Front ও গ্রীসের বিপ্লবীরা

৬ জুন থেকে শুরু হওয়া YPJ (Women’s Protection Units) এর কমান্ডার রুবার কামিসলোর উদয়োগকে  ব্রিগেড সমর্থন জানায় এবং এ প্রসঙ্গে নিম্নে উল্লেখিত বিবৃতিটি তারা প্রকাশ করেছে।

“সাম্রাজ্যবাদী রক্তপিপাসু শোষকদের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে রক্তের বন্যা বইছে।

এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি একত্রে আইএসআইএস কে নিয়ে এসেছে যাতে করে এ অঞ্চলের জনগণ দখলদারিত্ব ও শোষণের কাছে মাথা নত করে। আইএসআইএস জঙ্গিরা খ্রিস্টান, আরবীয় ও মুসলমান জনগণদের নির্বিচারে হত্যা করেছে।

জঙ্গিরা নারী ও শিশুদের দাস বাজারে বিক্রি করছে এবং ব্যাপক আকারে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে যা তাদের সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের শতাব্দীর পুরনো কৌশলকেই মনে করিয়ে দেয়।

এই সব গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য তাদের ভাষা, সংস্কার, জীবনযাত্রা ও পরিচয়কে ধ্বংস করা, আর এই উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করতে YPG-YPJ এর নেতৃত্বে  যে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে তা কোবানি, সিঞ্জর, তিল-হেমিস ও সেরেকানিয়েতে সফল হয়েছে।

বিশ্ব রাজনীতির সম্মুখ ভাগে উঠে এসেছে রোজাভা বিপ্লব। দারিদ্র্যপীড়িত গণমানুষের কাছে YPG-YPJ এর প্রতিরোধ প্রশংসিত হয়েছে ও সমর্থন পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক যোদ্ধাদের সহযোগিতায় রোজাভা আজকের বেকা ও ফিলিস্তিন হয়ে উঠেছে।

রোজাভা বিপ্লব হয়ে উঠেছে জার্মান অবরোধ কালীন প্যারি কমিউন, স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ কালীন মাদ্রিদ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কালীন স্টালিনগ্রাদ।

রোজাভা বিপ্লব প্রতিবেশী দেশগুলোর (বিশেষত তুরস্কে) ক্ষমতার ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করেছে এবং এভাবে বিশ্ব বিপ্লবের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ও নিপীড়িত জনগণের প্রতিরোধের আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে।

নারীদের বিপ্লব হিসেবে রোজাভা নারীর ইচ্ছাকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি পিতৃতন্ত্র ও বৈশ্বিক ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সারা বিশ্বের বিপ্লবীরা রোজাভার দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন এবং বিপ্লবকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে এখানে বিজয় অর্জনের জন্য লড়াই করে মৃত্যু বরণ করতে তারা দ্বিধা করেননি।

বিপ্লবকে শক্তিশালী করা ও তারা যে সকল স্থান থেকে এসেছেন সে সব স্থানে যুদ্ধকে ছড়িয়ে দেবার লক্ষ্যে তুরস্কের বিপ্লবী বাহিনী ও বিশ্বের বিভিন্ন অংশ থেকে বিপ্লবীরা রোজাভায় এসেছেন।

আমরা রোজাভায় যুদ্ধ করছি, শহীদ হচ্ছি ও প্রতিরোধের ঝান্ডা বহন করে চলেছি…

আমরা এ অঞ্চলে সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অগ্রভাগে যুদ্ধ করছি…

আমরা এ বিপ্লবে আইএসআইএস জঙ্গিদের নৃশংস আক্রমণের মোকাবেলা করছি…

আমরা বিপ্লবে বসবাস করছি ও নিজেদের ধমনী ও কোষের ভিতরে বিপ্লবকে অনুভব করছি…

YPG-YPJ এর পতাকার নীচে লড়াই করে আমরা কুর্দিস্তানের মেহনতি মানুষ, নিপীড়িত জনগণ, নারী ও আন্তর্জাতিকতাবাদী বিপ্লবীরা একত্রে রোজাভা বিপ্লব ঘটিয়েছি…

আমরা স্প্যানিশ, জার্মান, গ্রীক, তুর্কি, আরব, আর্মেনিয়, লাজ, সার্কেশীয় ও আলবেনিয়…

আন্তর্জাতিকতাবাদী মুক্ত ব্রিগেড গঠনের লক্ষ্যে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিপ্লবী বাহিনী ও সংগঠন।

গোটা বিশ্বের নিপীড়িত, মেহনতি, শ্রমিক, নারী, তরুণ, ধ্ররমীয় দল, পরিবেশবিদ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ফ্যাসিবাদ বিরোধী, পুঁজিবাদ বিরোধী, গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী গণমানুষকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি,  মধ্যপ্রাচ্য ও সারা বিশ্বে জনগণের ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের লক্ষ্যে রোজাভা বিপ্লবকে এগিয়ে নেয়া ও একে বিস্তৃত করতে আন্তর্জাতিকতাবাদী মুক্ত ব্রিগেডের পতাকার নীচে লড়াই করুন।”

সূত্রঃ

http://en.firatajans.com/kurdistan/internationalist-free-brigade-established-in-rojava


মোদীর সফরে মাওবাদী হাতে আটক ২৫০, মুক্তি, জনতার আদালতে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

2afeab2c-6f96-4d23-8a29-b70f89aa5714wallpaper1

কথিত উন্নয়নের বার্তা নিয়ে এ বারে মাওবাদীদের গড়ে পৌঁছে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তিনি গিয়ে ওঠার আগে রাত থেকেই কমপক্ষে দু’‌শো জন গ্রামবাসীকে আটক করে রেখে মাওবাদীরা বুঝিয়ে দিল, কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের উপরে তাদের আদৌ আস্থা নেই। মাওবাদীদের দাবি, এলাকার ভূ-সম্পদ লুঠ করে কয়েকটি বড় শিল্পগোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়াই এই দুই সরকারের মূল লক্ষ্য। এ দিন রাতে ওই গ্রামবাসীদের ছেড়ে দিলেও, মাওবাদীরা ‘জন আদালত’-এ বিচার করে এক জনকে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মোদীর সভাস্থল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে জিরম উপত্যকায়। দু’বছর আগে ঠিক এখানেই কংগ্রেসের কনভয়ে বড়সড় হামলা চালিয়ে বেশ কয়েক জন নেতাকে হত্যা করেছিল মাওবাদীরা।

ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদী অধ্যুষিত দন্তেওয়াড়ায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ গিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। এর তিন দশক পরে গেলেন মোদী। কলকাতায় যাওয়ার আগে তাঁর এই সফরের লক্ষ্য ছিল দুটি: এক, মাওবাদী অধ্যুষিত এই একটি জেলাতেই ২৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প পৌঁছে দেওয়া। যে প্রকল্পে ইস্পাত কারখানা থেকে রেল লাইন পাতা হবে। দুই,  মাওবাদীদের সুস্থ জীবনে ফেরার বার্তা দেওয়া।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই মাওবাদীরা বয়কটের ডাক দেয়। শুধু তাই নয়, সুকমা জেলার বিভিন্ন গ্রামের অন্তত দু’‌শো জন গ্রামবাসীকে আটক করে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, শুধুই দেশি-বিদেশি কয়েকটি বড় শিল্পগোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এই সব প্রকল্প ঘোষণা করছেন। প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করাই তাঁদের উদ্দেশ্য। সেই কারণেই কেন্দ্র জমি বিল আনতে চাইছে। বস্তারে হচ্ছে সেনা প্রশিক্ষণ স্কুলও। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মাওবাদী) দণ্ডকারণ্য বিশেষ জোনাল কমিটি তাই কেন্দ্রের ‘ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্বের সরকার’-এর বিরুদ্ধে সংগঠিত জঙ্গি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

দন্তেওয়াড়ায় শান্তি-বার্তা দিয়ে মোদী কলকাতায় পৌঁছে গেলেও রমন সরকারের মাথাব্যথা হয়ে ওঠে আটক করে রাখা গ্রামবাসীদের মুক্তির বিষয়টি। আলোচনার পথেই তাঁদের মুক্ত করার চেষ্টা চালাতে থাকে রাজ্য প্রশাসন। রাতে এক জন বাদে সবাইকেই ছেড়ে দেয় মাওবাদীরা। সদারাম নাগ এক জন শুধু জীবিত ফেরেননি। ‘জন আদালতে দোষী’ হওয়ায় মাওবাদীরা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

images (2)

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মাওবাদী মোকাবিলার পথ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। ইউপিএ আমলের এই নীতি থেকে অনেকটাই সরে এসে রাজনাথ সিংহের অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি খসড়া নীতিও তৈরি করে। যেখানে বলা হয়, দরকারে স্থলসেনা ও বায়ুসেনাকেও মাওবাদী মোকাবিলায় কাজে লাগানো হবে। এই খসড়া সমালোচনার ঝড় তোলে। দেশের সেনাকে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে বন্দুক তুলতে নির্দেশ দেওয়া যায় কি না, এ নিয়ে বিতর্ক হয় বিস্তর। এই পরিস্থিতিতে মোদী আজ মাওবাদী গড়ে গিয়ে যে ভাবে উন্নয়নের কথা বললেন, সেখানকার মানুষের দুঃখ-বেদনা বোঝার কথা বললেন, তাতে স্পষ্ট, কেন্দ্র এখন দ্বিমুখী রণকৌশল নিয়েই এগোতে চাইছে। এক দিকে কড়া হাতে মাওবাদী মোকাবিলার প্রস্তুতি চালানো। এর পাশাপাশি, উন্নয়নের মাধ্যমে মাওবাদীদের থেকে সাধারণ মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা।

মোদী এই সফরে দু’টি কাজই করতে চাইলেন। চলতি বছরে এপ্রিল পর্যন্ত ছত্তীসগঢ়ে ১৮৮টি মাওবাদী হামলা হয়েছে। নিহত ৪৬ জন। এই অবস্থায় মাওবাদীদের গড়ে পৌঁছে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান ও গ্রামবাসীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করলেন। আর তাঁর বক্তব্যে জোর পেল দ্বিতীয় পথটি।

সূত্রঃ

http://www.hindustantimes.com/india-news/pm-modi-to-visit-dantewada-today-maoists-call-for-bandh/article1-1345390.aspx


ভারতঃ “চলে যাও অথবা মর” -বস্তারের পুলিশদের সতর্ক করে দিল মাওবাদীরা

police_2388621f

কনস্টেবলকে অপহরণ ও খতমের দায়িত্ব স্বীকার করল মাওবাদীরা

ছত্তিসগড়ের বস্তার অঞ্চলের নিম্নস্তরের পুলিশদের চাকরী ছেড়ে দেয়ার অথবা “পিএলজিএ (People’s Liberation Guerrilla Army) এর গেরিলাদের হাতে মৃত্যুর” হুমকি দিয়েছে সিপিআই (মাওবাদী)।

মাওবাদীদের পশ্চিম বস্তার বিভাগীয় কমিটির সেক্রেটারি মাধভী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান,  অপহরণকৃত কনস্টেবল বীরা বসন্তকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে মাওবাদীরা । ৭ই এপ্রিল তাকে অপহরণ করা হয় ও দুই সপ্তাহ পর বিজাপুর জেলায় তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিরস্ত্র বীরা তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে গ্রামে যাচ্ছিলেন। কনস্টেবল বীরার অপহরণ বিজাপুরের স্থানীয় অধিবাসী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের “নীরব প্রতিবাদের” দিকে ঠেলে দিয়েছে। তার মুক্তির জন্য স্কুলের বাচ্চারা প্রতিবাদ র‍্যালীর আয়োজন করেছে।

বীরার মৃত্যুর জন্য রাজ্য সরকার ও বিজাপুর পুলিশকে দায়ী করে মাওবাদী নেতা দাবী করেছেন, তার মুক্তির জন্য জেলা পুলিশ কোনরকম সংলাপে বসেনি। “তার বদলে, আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি আয়োজন করার জন্য পুলিশ স্থানীয় অধিবাসী ও স্কুলের বাচ্চাদেরকে চাপ দেয়। আমাদের পার্টির নীতিমালায় নিরস্ত্র পুলিশদের হত্যা করার কোন বিধান নেই। আমরা অনেক জওয়ানকে মুক্তি দিয়েছি যারা নিরস্ত্র ছিল। তবে আমরা তাদের ছেড়ে দিতে পারিনা যারা জেনেশুনে জনগণের উপর নিষ্ঠুরতা চালায়। মাধভী বলেন, বীরা ছিল সেই ধরনের একজন পুলিশ”।

তিনি আরো বলেন, “সে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে গণ আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছিল এবং অসংখ্য সাজানো এনকাউন্টার ও বিজাপুরের আদিবাসীদের গ্রামে হামলার নেতৃত্বে সে ছিল। সে গ্রামবাসীদের থেকে অর্থও আদায় করত”।

“বীরা তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে গ্রামে যাচ্ছিল”- পুলিশের এ দাবীকেও অস্বীকার করেছেন মাওবাদী নেতা। মাধভীর দাবী, “সে আওয়াপল্লী এলাকায় আমাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করে বিজাপুরের এসপির অফিসের দিকে যাচ্ছিল। সে জানত সে কী করছিল এবং তার মত একজন গণশত্রুকে ছেড়ে দেয়া আমাদের পক্ষে অসম্ভব ছিল”।

মাওবাদী নেতা সতর্ক করে দিয়ে জানান, “বিরার এই খতম বস্তারের সকল নিম্নস্তরের পুলিশদের প্রতি একটি সতর্কতা হিসেবে কাজ করবে। কর্পোরেটদের জন্য যুদ্ধ করা বন্ধ কর, -যারা আদিবাসী ভূমি দখল করার জন্য এখানে এসেছে। পুলিশের চাকরী বাদ দিয়ে অন্য কোন চাকরী যোগাড় কর যদি বস্তারে থাকতে চাও। তা না হলে PLGA এর হাতে মৃত্যুর জন্য তৈরী হও”।

সূত্রঃ http://www.thehindu.com/news/national/other-states/quit-or-die-maoists-warn-policemen-in-bastar/article7151053.ece