বিপ্লবী চলচ্চিত্রঃ The Black Panthers: Vanguard of the Revolution
Posted: May 9, 2017 Filed under: বিপ্লবী চলচ্চিত্র, লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি, The Black Panthers: Vanguard of the Revolution Leave a commentএই প্রামাণ্যচিত্রে আছে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি’-র উত্থান ও পতনের গল্প, বিশ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী ও বিতর্কিত সংগঠন যা প্রায় ৫০ বছর ধরে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলো। চলচ্চিত্র নির্মাতা স্ট্যানলি নেলসন এই প্রামাণ্যচিত্রে ’৬০ এর দশকে ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টির উত্থান এবং মার্কিন সংস্কৃতি ও জনগণের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে এর প্রভাব দেখিয়েছেন। মুক্তিপ্রাপ্তির সময়ঃ ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বামপন্থি গেরিলা দলঃ ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি
Posted: March 12, 2017 Filed under: লাল সংবাদ/lal shongbad | Tags: গেরিলা দল, ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি Leave a commentদ্য ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি বা বিপিপি (প্রকৃত ভাবে দ্য ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি ফর সেলফ ডিফেন্স) একটি বিপ্লবী কৃষ্ণাঙ্গ জাতীয়তাবাদী ও সমাজতান্ত্রিক গেরিলা সংগঠন ছিল। ১৯৬৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর কার্যক্রম অব্যহত ছিল। এছাড়া আন্তর্জাতিক ভাবে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত আলজেরিয়াতে এ সংগঠনটি কাজ করেছিল।
ষাটের দশক। গোটা আমেরিকাজুড়ে চলছে নতুন আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত তৈরির যুদ্ধ। তার মধ্যে বর্ণবৈষম্যের তীব্র শিকার হচ্ছে কালোরা। আমেরিকান সাদা নাগরিক ও তাদের পুলিশের হাতে কালোরা প্রতিনিয়ত নির্মমভাবে অত্যাচারিত হতে থাকে, যা ইতিহাসে ‘পুলিশ ব্রুটালিটি’ নামে পরিচিত। সব ধরনের বৈষম্যের শিকার ও নিপীড়িত মানুষদের অধিকার আদায়ের জন্য গড়ে উঠে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি ফর সেলফ ডিফেন্স’ সংক্ষেপে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি’ বা ‘বিপিপি’। ১৯৬৬ সালের ১৫ অক্টোবর হুয়ে নিউটন ও ববি স্কেলের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে। বিপিপির অন্য শাখাগুলোর মূল নেতা হিসেবে যোগ দেন আলবার্ট হওয়ার্ড, শেরয়েন ফোর্টে, রেগে ফোর্টে ও লিটল ববি হুটন।
প্রথমদিকে শুধু কালোদের প্রতিরক্ষাকে মূল করে পার্টি গঠিত হলেও অল্প দিনেই পুঁজিবাদ, ফ্যাসিবাদ, বর্ণবৈষম্য, সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে কিন্তু সাম্যবাদী, নারীবাদী, মার্ক্স-লেনিন ও মাও-এর আদর্শে রূপান্তরিত হয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, ন্যায়বিচার, সম-অধিকার, শান্তিসহ মোট দশ দফা যুগান্তকারী ধারণা নিয়ে ওকল্যান্ডের একটি স্কুলে নিয়মিতভাবে পার্টির কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে থাকে। ১৯৬৯ সালে, দলটি বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। অর্থনৈতিক সাম্যতার প্রতীক হিসেবে এলাকার শিশুদের জন্য সকালের খাবার বিনা মূল্যে দেওয়া ও অসুস্থদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ইত্যাদি। । এর পাশাপাশি লাইব্রেরি স্থাপন, বিদ্যালয় পরিচালনা, আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণাসহ নানান কর্মসূচি হাতে নেয়।
মাত্র দুই বছরের মাথায় ১৯৬৯ সালের মধ্যে গেরিলা দলটি আমেরিকার বোস্টন, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, সানফ্রান্সিসকোসহ প্রায় ২০টি স্থানে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এ সময়ে দশ হাজারের বেশি কর্মী ও নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। এমন অবস্থায় দেশটির ক্ষমতাসীন সবার টনক নড়ে ওঠে। যার ফলে এফবিআই ‘বিপিপি’কে দেশটির অভ্যন্তরীণ সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং এর প্রেক্ষিতে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম (COINTELPRO) নামে একটি গুপ্ত পরিকল্পনা চালায় দলটিকে মানুষের কাছে খারাপ ও অকার্যকর করে তোলার উদ্দেশ্যে। যাতে করে তারা হয়ে পড়ে অনেকটাই নিঃস্ব। শুরু হয় ব্যাপক হারে ধরপাকড় ও গণমাধ্যমে অপপ্রচার।
একদিকে দলটিকে অবৈধ ঘোষণা করে প্রচার করতে থাকে- এরা মাদকসহ অনৈতিক কাজে যুক্ত; অন্যদিকে গুপ্তহত্যার শিকার হয় দলটির নেতা-কর্মীরা। শুধু ১৯৭০ সালেই দলটির মূল ১০ নেতাকে হত্যাসহ অগুণিত কর্মীকে গুম ও বিকলাঙ্গ করে ফেলা হয়। ১৯৭২ এর দিকে দলটির কার্যক্রম শুধু ওকল্যান্ডে তাদের সদর দপ্তরে ও একটি বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ে। সেখানে তারা স্থানীয় রাজনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। সত্তরের দশক ধরে ধীরে ধীরে দলটি নিস্ক্রিয় ও স্তিমিত হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালে ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টির নেতাকর্মী অবশিষ্ট ছিল মাত্র ২৭ জন।
ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টির ইতিহাস বিতর্কিতই থেকে যায়। ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টিকে ১৯৬০ এর দশকের সবচেয়ে প্রভাবশালী কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলন সংগঠন এবং স্বদেশী কৃষ্ণাঙ্গদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিশ্বব্যাপী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী যোগসূত্র স্থাপনকারী হিসেবে অভিহিত করা হয়।
তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট