ভারত- ”দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধ আসন্ন” সতর্কবাণী জানালেন সিপিআই (মাওবাদী) এর শীর্ষ নেতা গণপতি

india-ganapathi

মাওবাদী তথ্য বুলেটিনকে(MIB) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দলের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বলেছেন সিপিআই (মাওবাদী) এর সাধারণ সম্পাদক গণপতি

“ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি বিদেশের ও ভারতের বৃহৎ পুঁজিপতি ও ভূস্বামীদের স্বার্থ রক্ষার্থে তীব্র গতিতে সাম্রাজ্যবাদপন্থী, দেশ বিক্রির নীতিমালার বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছে ও একই সাথে বিভিন্ন পায়তারায় হিন্দু- ফ্যাসিবাদী এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। সুতরাং এই অবস্থায়, সকল গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ ও দেশপ্রেমিক শক্তিগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরী। আরো নতুন শ্রেণী, সামাজিক ক্ষেত্র ও শক্তিকে সংগ্রামের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে আসতে হবে ও এতে করে গণযুদ্ধের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত হবে। “বিপ্লবের জন্য বিশ্বের সর্বত্র পারিপার্শ্বিক অবস্থা ক্রমাগত অনুকূল হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব অর্থনীতি এখনো পর্যন্ত গুরুতর সংকটের মধ্য দিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে এবং বিশ্বে সমস্ত মৌলবাদী বিরোধীতাগুলো তীব্র আকার ধারণ করছে। ফলস্বরূপ, বিশ্বের সর্বত্র বিপ্লবী, গণতান্ত্রিক ও জাতীয় মুক্তিকামী শক্তিগুলো সাম্রাজ্যবাদ ও এর অভ্যন্তরীণ খুঁটিগুলোর বিরুদ্ধে শক্তি অর্জন করছে। মাওবাদী শক্তিগুলোও একীভূত হচ্ছে”।

পিএলজিএ (Peples Liberation Guerilla Army) এর উন্নয়নকে তরান্বিত করা ও গেরিলা যুদ্ধকে আরো তীব্র করে তুলতে দলের পরিকল্পনা বিষয়ে গণপতি বলেন, “শত্রু যখন পাল্টা কোন কৌশল গ্রহণ করে, তখনই একটি নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। তাই আমাদেরকে এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে যা গেরিলা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে শত্রুর উচ্চতর বাহিনীকে মোকাবেলা করতে ও জনগণকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে আমাদের জন্য সুবিধাজনক হবে। গেরিলা যুদ্ধ গড়ে তোলা ও উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে আমাদের গণ ভিত্তিকে মজবুত করা”।

বলশেভিকীকরণ ক্যাম্পেইনের গুরুত্ব প্রসঙ্গে এ শীর্ষ মাওবাদী নেতা বলেন, ২০১৩ সালে পার্টিকে বলশেভিকীকরণের জন্য পার্টি থেকে আহ্বান জানানো হয়েছিল এবং পার্টির অভ্যন্তরে, পিএলজিএ ও গণ সংগঠনগুলোর মধ্যে এ বলশেভিকীকরণ প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে। “ এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে আরো সময়ের প্রয়োজন এবং কেবল তখনই পার্টির বলশেভিকীকরণের সাফল্য সম্পর্কে আমরা মূল্যায়ন করতে পারব”।

বুর্জোয়া শ্রেণীকে উৎখাত করে রুশ বলশেভিক পার্টি (CPSU-B) (Communist Party of The Soviet Union-Bolsheviks)প্রথম বারের মত প্রলেতারিয়েত একনায়কত্ব কায়েম করে। গোটা বিশ্বে যে সময় কোন কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় ছিল না, সেসময় এই পার্টি সংগ্রামী জনগণকে ক্ষমতায় আসীন করেছিল। বলশেভিক পার্টি মানব ইতিহাসে সর্বপ্রথম সমাজতন্ত্রের সূচনা করে। কাজেই আমরা এ পার্টিকে আমাদের মডেল হিসেবে  গ্রহণ করেছি এবং এ পার্টি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এর সমস্ত গুণাবলীগুলোকে আত্মস্থ করে আমাদের পার্টিকে এরকম একটি  প্রলেতারিয়েত পার্টিতে রূপান্তরিত করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি”।  তিনি আরো বলেন, এ কারণে এর নামকরণ করা হয়েছে বলশেভিকীকরণ ক্যাম্পেইন।

“অন্যদিকে, মাওবাদীদের জন্য চায়নার কমিউনিস্ট পার্টির মডেলটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ চায়না ও ভারতের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে মিল রয়েছে। চায়না কমিউনিস্ট পার্টির (CPC) যে বৈশিষ্ট্যগুলো আধা উপনিবেশিক, আধা সামন্তবাদী অনগ্রসর দেশ চায়নাতে বিপ্লবকে সাফল্যমন্ডিত করেছে ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে সেই বৈশিষ্ট্যগুলো জানা ও আত্মস্থ করা প্রয়োজন। দেশটির গণযুদ্ধের লাইন গড়ে তোলা ও পিপলস আর্মি গঠন করা, একটি সফল ইউনাইটেড ফ্রন্ট স্থাপন করা ও মুক্তাঞ্চল তৈরী করার পিছনে রয়েছে চায়নার সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক সম্প্রদায়। গঠিত হবার পর থেকেই চায়না কমিউনিস্ট পার্টি CPSU(B) পার্টিকে মডেল ধরে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির অবিরত প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে”।

গণপতি বলেন, আমরা এই ক্যাম্পেইনটি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পার্টির দীর্ঘ বিপ্লবী ইতিহাস থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে পার্টির বলশেভিকীকরণের প্রশ্নে আমরা এই দুটি পার্টিকে আমাদের মডেল হিসেবে বিবেচনা করব।

সূত্রঃ Express News Service, 17th March 2015


2 Comments on “ভারত- ”দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধ আসন্ন” সতর্কবাণী জানালেন সিপিআই (মাওবাদী) এর শীর্ষ নেতা গণপতি”

  1. drheem roy says:

    thanks. I read it.

    Like

  2. Notun diner shopno nieh k jagey……….

    Like


Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.